দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫ ডিগ্রি, জনজীবনে দুর্ভোগ
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:২২
দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫ ডিগ্রি, জনজীবনে দুর্ভোগ
হিলি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কনকনে শীত আর ঠান্ডা হিমেল বাতাসে কাঁপছে হিলির মানুষ। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে গত একসপ্তাহ ধরে সকাল থেকেই ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। রাতেও ঝড়ছে কুয়াশা সাথে ঠান্ডা হিমেল বাতাস।


সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৬ শতাংশ। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এই জেলায়। রবিবার (১৪ জানুয়ারি) একই সময় তাপমাত্রা ছিল ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল এই জেলায়।



ঘন কুয়াশার কারণে পথঘাট কিছুই দেখা যাচ্ছে না। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও অনেক অংশে কমেছে। যারা জীবিকার তাগিদে বের হচ্ছেন তারাও কাজ না পেয়ে অলস সময় পার করছেন। দিনে ও রাতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে শিশু ও বয়স্করা।



এদিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা।


হাকিমপুর উপজেলার চকচকা গ্রামের মিলন মন্ডল বলেন, এক সপ্তাহ ধরে আমাদের সূর্য মামার দেখা মিলছে না। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু করে পরদিন বিকেল পর্যন্তও রোদ উঠছে না। তার সঙ্গে ঘনকুয়াশা আর হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে আর বাড়িয়ে দিয়েছে। শিশু ও বয়স্করা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।


হাকিমপুরের পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা যারা বয়স্ক মানুষ তারা শীতবস্ত্রের অভাবে বাড়ি থেকে কাজ ছাড়া বের হচ্ছি না। তিনি সরকারি ভাবে শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানান।


হাকিমপুর হাসপাতালে ভর্তি মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, রবিবার ( ১৪ জানুয়ারি) বিকেল থেকে শীতের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি। তাই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রয়েছি।


কথা হয় হিলি বাজার সিপি রোডের এলএসডি গোডাউন মোড়ে বসা কামার কৃষ্ণ কর্মকার এর সাথে। তিনি বলেন, টানা কয়েক দিন ঘনকুয়াশা ও হিমেল বাতাস। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু কি করব দাদা পেট তো আর মানেনা। তাই আজ কাজ করার জন্য আমি বাজারে আসছি। সকাল থেকে বসে থাকার পর দুপুরে দুটি বটির কাজ পেয়েছি। দুটি বটির কাজ করে একশত টাকা পেয়েছি। কয়েক দিন থেকে তেমন কাজকাম নেই।


হিলির রিকশা চালক মজিবর বলেন, সকালে বের হয়েছি।তেমন কাজকাম নেই। ঠান্ডা আর বাতাসের কারণে যাত্রীরা রিকশায় উঠতে চায় না।আমি সকাল থেকে এ পর্যন্ত পঞ্চাশ টাকা পেয়েছি।


হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান জানান, এই সময়টায় অতিরিক্ত শীতের কারণে সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, মাথা ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে দেখা দেয়। তাই সকলকে সতর্ক হয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদের ওষুধসহ সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।


হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন, গতকাল নিজ কার্যালয়ে এবং রাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে হাকিমপুর উপজেলার ১ টি পৌরসভাসহ ৩ টি ইউনিয়নে ২ হাজারেরও বেশি শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, আরও শীতবস্ত্রের জন্য জেলায় চাহিদা পাঠানো হয়েছে।


বিবার্তা/রব্বানী/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com