সাভার উপজেলার ভাকুর্তা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে জ্বালানি তেল। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ। নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন স্থানীয়রা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই গড়ে উঠা এসব টায়ার পোড়ানো কারখানা পরিবেশ দূষণ, জনদুর্ভোগ ও জনস্বাস্থ্যের হুমকি সৃষ্টি করে আসলেও এখনো কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
ভাকুর্তার মোগড়াকান্দা,হিন্দু ভাকুর্তা,হারুরিয়া এলাকায় এসব অবৈধ কারখানা গড়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নাম না দেওয়া অবৈধ এসব টায়ার পোড়ার উৎকট গন্ধে রাতে ঘুমানো যায় না। দীর্ঘদিন এ গন্ধ বাধ্য হয়েই নিশ্বাস নিতে হচ্ছে।
এলাকার শিশু,বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ফুসফুস ক্যান্সারসহ জটিল শারীরিক রোগে ভুগছেন।
বাতাসে ও ছবার পানিতে কালো পাউডার-ধোঁয়া মেশার ফলে পরিবেশ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিবর্ণ আকার ধারণ করেছে এসব এলাকার সবুজ প্রকৃতি। জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়েই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ির অব্যবহৃত বা পুরোনো টায়ার এনে দূষণে সহায়ক চুল্লিতে পোড়ানো হয়। পরে আগুনে গলানো টায়ার থেকে অপরিশোধিত (ফার্নেস অয়েল) জ্বালানি তেল উৎপাদন করে বিটুমিন পরিবহনের ট্যাংক গাড়িতে ভর্তি করে অন্যত্র পরিবহন করা হয়। যা ড্রামজাত করে বিভিন্ন ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করে আসছে এসব কারখানার মালিকরা।
টায়ার পুড়িয়ে উৎপাদিত এসব তেল-আলকাতরাকে সড়কে ব্যবহৃত বিটুমিনের পরিবর্তে নিম্নমানের সামগ্রী হিসেবেই ধরা হয়। যা ব্যবহারে সড়কের স্থায়িত্ব কম হয়। শুধু সড়ক সংস্কারে নয় এসব জ্বালানি তেল বিভিন্ন কারখানায় জ্বালানি তেল হিসেবেও বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায় একের পর এক পুরোনো টায়ার বোঝাই ট্রাক ও তেল সংরক্ষণের খালি ড্রাম কারখানার ফটক দিয়ে ভিতরে ঢুকছে। দিনের বেলায় টায়ার পোড়া বন্ধ থাকলেও পুরানো টায়ার এনে রাতে পোড়ানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সবাইকে ম্যানেজ করে পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে মালিকরা। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী দুর্ভোগ পোহালেও দেখার যেন কেউ নেই। মানুষ মরলে তাদের কী যারা এসব দেখভাল করবে তারা তো টাকা পাচ্ছে। জনগণের কষ্ট দেখার কী দরকার। প্রভাবশালীদের হাতের মুঠোয় নিয়ে জনগণের সীমাহীন দুর্ভোগ তৈরি করেছে। জমিতেও এখন ফসল হচ্ছে না।
পানি, মাটিসহ পরিবেশের সব উপাদান যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনি মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে জীববৈচিত্র্যও। এছাড়াও এসব এলাকায় ট্যানারির বর্জ্য দিয়ে মাছ ও মুরগির খাদ্য তৈরি করছে কিছু অসাধু ব্যক্তিরা। স্থানীয়রা এসব অবৈধ কারখানা ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, অবৈধ এসব কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিবার্তা/শরীফুল/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]