ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ: ভিকারুননিসার শাখাপ্রধান বরখাস্ত
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৪০
ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ: ভিকারুননিসার শাখাপ্রধান বরখাস্ত
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ফের ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে মো. শাহ আলম খান নামে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির মূল দিবা শাখার (বাংলা ভার্সন) প্রধান।


বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধরীর সই করা চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।


ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি সংক্রান্ত কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে মাউশি কর্তৃক জারিকৃত ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য প্রযোজ্য নির্দেশনা অনুসরণ না করে অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্তে মূল দিবা (বেইলি রোড) শাখা প্রধান মো. শাহ আলম খানের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।


চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, আপনি একজন দায়িত্বশীল শাখা প্রধান ও সিনিয়র শিক্ষক হয়ে এমন গর্হিত কাজ করার কারণে বিভিন্ন মহলে ভর্তি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং জনসম্মুখে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।


কেন তাকে চাকরি হতে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশও দেয়া হয়েছে চিঠিতে। এছাড়া আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের লিখিত জবাব দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।


জানা যায়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ভিকারুননিসায় বাড়তি শিক্ষার্থী ভর্তির খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে পরিদর্শনে যান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই কর্মকর্তা। গত ৭ বছরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তিসহ নানান বিষয়ে হাইকোর্টে দেড় শতাধিক রিট করা হয়েছে। ভর্তি বাণিজ্যের বিষয়টি বারবার সামনে আসলেও এ বিভাগটি দুর্নীতিমুক্ত করা যায়নি।


স্কুল সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য লটারি হলেও সেখানে বেশ কিছু বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে যেগুলো অনলাইনে সার্চ করে ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। পরে বিষয়টি তদন্ত করা হয়।


বুধবার (৩ জানুয়ারি) মূল দিবা শাখার (বাংলা ভার্সন) প্রথম শ্রেণির সব ফরম গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে সেগুলো পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হয়। তাতে চারজন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রমাণ পায় কর্তৃপক্ষ।


অবৈধ ভর্তি বাণিজ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. শাহ আলম খান বলেন, অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি, নিয়েছে ভর্তি কমিটি। ভর্তির সিদ্ধান্তে সবার স্বাক্ষরও রয়েছে। আমি শতভাগ নির্দোষ। আমি সৃষ্টিকর্তার সামনে ও প্রিন্সিপ্যালের সামনে এ কথা বলেছি।


ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ভর্তির যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করায় শাহ আলম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন। তদন্তের পর গভর্নিং বডি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com