মজুরি বাড়ানোর দাবিতে সাভারের আশুলিয়ায় সপ্তম দিনের মত সড়কে নেমে অবরোধের চেষ্টা করেছে বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা। আশুলিয়ার জামগড়ায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে এক ভ্যানচালক ও দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
৪ নভেম্বর, শনিবার জামগড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- ভ্যানচালক আমিরুল, পোশাকশ্রমিক শামিম ও তাইজুল।
জানা গেছে, সকালে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কার্ড পাঞ্চ করে বেরিয়ে আসে। পরে তারা বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর সড়কের জামগড়া, ছয়তলাশের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে নেমে অবরোধের চেষ্টা করে ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেলের পাশাপাশি রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখা যায় পুলিশকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৮টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জামগড়া ছয়তলা এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা একত্রিত হতে থাকে। পরে শ্রমিকরা কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। তবে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গলির ভেতরে ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশও গুলি ছোঁড়ে। এ সময় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক ভ্যানচালক। গুলিবিদ্ধ ভ্যানচালককে উদ্ধার করে স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার নারী ও শিশু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয় ভট্টাচার্য বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে দুই পোশাকশ্রমিকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ ভ্যানচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি বাইপাইল থেকে ১২০ টাকা ভাড়ায় একজনকে নিয়ে ছয়তলায় যাই। সেখানে গিয়ে শ্রমিক আন্দোলনের মুখে পড়ি। এ সময় পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে আমি গুলিবিদ্ধ হই। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, সকালে শ্রমিকরা সড়কে নামার চেষ্টা করা হলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা রাবার বুলেট ছুঁড়েছি। কিন্তু কাউকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়নি।
শিল্প পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি বলেন, সকালে আশুলিয়ায় পোশাক কারখানা খোলার পর শ্রমিকরা হাজিরা দিয়ে কারখানা থেকে বের হয়ে রাস্তায় জড়ো হচ্ছিলেন। পুলিশ তাদের সরিয়ে রাস্তা খালি করতে গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]