গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মহাসড়ক অবরোধ, গাড়িতে অগ্নি সংযোগ, দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষোভ করেছে কারখানার শ্রমিকরা।
৩১ অক্টোবর, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক, সফিপুর, চান্দরা, পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় দোকানপাট, হাসপাতাল ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ কারখানা শ্রমিকরা। কয়েকটি পয়েন্টে শ্রমিকরা পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে রাখে। মহাসড়কে গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। পুলিশ মহাসড়ক ও ভাঙচুর ঠেকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বেশ কয়েকদিন ধরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের টানা আন্দোলন চলছে।
এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার হাজার হাজার শ্রমিক লাঠি, লোহার রড নিয়ে সড়কে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা সফিপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে অবস্থিত তানহা নামক প্রাইভেট হাসপাতালে হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই হাসপাতালে তাণ্ডব চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে হাসপাতালের প্রচুর ক্ষতিসাধন করে। এ সময় হাসপাতালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
শ্রমিকরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে বিক্ষোভকালে অরাজকতার সৃষ্টি করে। এ সময় শ্রমিকদের বিক্ষোভে বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ দিক বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এসময় শ্রমিকরা দফায় দফায় হামলা চালায়। তারা চন্দ্রা এলাকায় বিভিন্ন কারখানা ও পূর্বচান্দরা এলাকায় কয়েকটি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে পুলিশ সফিপুরে এসে টিয়ারসেল, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।
পুলিশ চলে গেলে শ্রমিকরা পুনরায় থেমে থেমে হামলা চালায় ও মহাসড়কে বিক্ষোভ করে। এছাড়া উত্তেজিত শ্রমিকরা কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের পশ্চিমচান্দরা এলাকায় ওয়ালটন প্লাজার সামনে একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় শ্রমিকরা মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি ও সফিপুরে পুলিশ বক্সে হামলা চালায়। এতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকদের দাবি গতকাল দুই শ্রমিককে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ২৩ হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। সকালে উপজেলার মৌচাক বাজার এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে এবং মহাসড়কে ১০-১২টি যানবাহন ভাঙচুর করে।
এ সময়ে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শতশত শ্রমিক পুলিশদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত কালিয়াকৈর থানাধীন পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে উল্টো তারা আমাদের উপর হামলা করে। টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আর পুলিশ বক্স ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, কারখানা ও যানবাহন ভাঙচুরকারীরা প্রকৃত শ্রমিক নয়। প্রকৃত শ্রমিকরা এসব করতে পারে না। তবে এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিবার্তা/তুহিন/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]