কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি, দুর্ভোগ কাটেনি
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৩৫
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি, দুর্ভোগ কাটেনি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে ধরলা ব্রহ্মপুত্র দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৭ হাজার পরিবার। পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।


নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নৌকাতে যাতায়াত করছে মানুষজন। পরিবারের লোকজন গরুর ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে, উঁচু স্থানে। এছাড়া জেলায় ৫ হাজার ৬শ ৮৩ হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত তলিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকেরা। অন্যদিকে নদীর তীরবর্তী মানুষজন ভাঙনের মুখে পড়ে ঘর বাড়ি ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেকে।


কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, শনিবার ২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় ধরলা নদীর পানি বিপদসীমা সীমার ৬৮ সে. মি ও দুধকুমার নদের পানি ১৩২ সে.মি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২৩ সে.মি ও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টের পানি বিপদসীমার ৩ সে.মি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চরের মতিয়ার রহমান বলেন, ছেলে মেয়ে নিয়ে গত এক সপ্তাহের বেশি খুব মসিবতে আছি। চারদিকে পানি বের হওয়ার উপায় নেই। খাটের উপর মাচা করে রান্না করে খাচ্ছি। একবেলা রান্না করে দুবেলা খাওয়া ছাড়া উপায় নাই। এ মুহূর্তে আমাদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছি।


ওই এলাকার আছমা বেগম বলেন, ঘরে চাল আছে রান্না করার উপায় নাই। একবেলা ভাত রান্না করে তিনবেলা খাচ্ছি। পানিতে হাঁটাচলা করে সংসারের কাজ করতে গিয়ে হাত পা ঘা হচ্ছে। আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।


চিলমারীর শাখাতি ও নয়ারহাট গ্রামের মো. আক্কাস আলী, রহুল আমীন বলেন, গত এক সপ্তাহে আমাদের গ্রামে প্রায় ৫০-৬০টি ঘর বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। চারপাশে পানি উঁচু জায়গা না থাকায় পানির মধ্যে ঘর তুলে রেখেছি। কি করবো বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে আছি। বৃষ্টি হলে আমাদের খুব কষ্ট হয়।


কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, উজানের ঢল আর বৃষ্টির পানিতে জেলায় প্রায় ৫ হাজার ৬ শত ৮৩ হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত তলিয়ে নষ্ট হবার সম্ভবনা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে।


কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামের সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবে।


কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বানভাসি মানুষের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে যথেষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেগুলোর বিতরণের কাজ চলছে। বানভাসিদের দুর্ভোগ কমাতে জেলায় ১৮টি স্থায়ী ও ৩৬১টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।


বিবার্তা/বিপ্লব/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com