কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারাটরি উচ্চ বিদ্যালয়
প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ২২:৩৭
প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজার পৌরসভা পরিচালিত একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারাটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিকের অপসারণ চেয়ে কর্মবিরতি পালন করেছে শিক্ষক-কর্মচারিরা। একই সময় শিক্ষক-কর্মচারি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মানববন্ধনও করেছে।


৩০ আগস্ট, বুধবার দুপুরে স্কুলের গেইট সংলগ্ন সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।


মানববন্ধনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ উত্থাপন করে দ্রুত অপসারণের দাবি জানান হয়। অন্যথায় অনিদির্ষ্টকালের কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।


সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, গত ২০ আগস্ট পৌরসভার মেয়র বরাবরে প্রধান শিক্ষকের প্রতি অনাস্তা জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ৪০ শিক্ষক-কর্মচারির মধ্যে ৩২ জন এই আবেদনটিতে স্বাক্ষর করেছেন। একই সময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পৃথকভাবে মেয়র বরাবরে আবেদন করেছেন। এই আবেদন করার জের ধরে প্রধান শিক্ষক আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।


শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০২২ সালের ২০ জুলাই নতুন প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান আমিমুল এহসান মানিক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষকদের অপনাম, নাজেহাল করা হচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষার্থীদের জিন্মি করে অবৈধভাবে অর্থ আদায়, পৌরসভা পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটির বেতন-ভাতা জাতীয়করণ প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশি হলেও শিক্ষক আন্দোলনে যোগদান করে টানা ১৮ দিন প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ করে রাখা, সরকার বিরোধী নানা তৎপরতা, মানবতা বিরোধী অপরাধে দন্ডিত দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বির্তকিত মন্তব্য, শিক্ষকদের চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি, পরিচালনা কমিটির সভা না করে ইচ্ছামতে অর্থনৈতিক অনিয়ম, পৌর কৃর্তপক্ষের অনুমতি ছাড়া শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অব্যবস্থাপনা শুরু করেছে।


এক সময়ের ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত এই প্রধান শিক্ষক তথ্য গোপন করে জামায়াত পরিচালিত একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যে নিউজ পোর্টালটি সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী প্রচারণা করেন। যা প্রধান শিক্ষক নিজেও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন।


সমাবেশে অংশ নেয়া অভিভাবকরা তাদের নানাভাবে নাজেহালের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়েছেন। শ্লোগান দিয়ে অপসারণের পক্ষে নিজের সমর্থনের কথা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরাও।


শিক্ষক গোলাম সরওয়ার বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ বছরের ইতিহাসে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। এই প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর যে অপতৎপরতা শুরু করেছে তা ঘৃণিত। শিক্ষক-অভিভাবক নাজেহাল যে তার স্বাভবজাত বৈশিষ্ঠ্য হয়ে উঠেছে।


প্রতিষ্ঠানটিতে টানা ২৯ বছর শিক্ষকতা করে উল্লেখ মাওলানা মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেছেন, এক বৃদ্ধ শিক্ষক আমি। আমাকেও প্রকাশ্যে নাজেহাল করছেন। একই সঙ্গে নারী শিক্ষকদের নিয়ে মন্তব্য, অনিয়মের আখড়া করতে চান। এই শিক্ষক চান না কেউ।


পরেশ কান্তি দে তার বক্তব্যে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে চাই। কিন্তু আজ সেই শিক্ষার্থীরাই আমাদের নিয়ে রাস্তা নেমে আন্দোলন করছে। যা খুবই দুঃখজনক। এটা দ্রুত সমাধান জরুরী।


মানববন্ধনে অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আ ন ম নুরুল আমিন, রিটু পাল, ফাতেমা জহুরা, সেলিমা সুলতানা, সুজন দাশ, মোহাম্মদ সাইফুল কবির সাইকী, তাহমিদুল মুনতাসির, নয়ন কান্তি দে, ইফফাত সানিয়া, শিউলি দত্ত, প্রিয়াংকা দত্ত, নিলুফা ইয়াসমিন, নিশাত শারমিন, রুমি দাশ, এলিস পাল, রাহানুমা ইয়াসমিন তামান্না, সংগীতা দাশ, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ ফারুক, উৎফল চক্রবর্তী, অপরাজিতা বড়ুয়া।


কর্মচারীদের মধ্যে মোহাম্মদ আলম হেলালী, পিন্টু মল্লিক, জীবন চন্দ্র মল্লিক, জুবায়ের আহমদ, মোহাম্মদ সেলিম, নাছিমা আক্তার, জাফর আলম, স্বপনা দাশ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


তবে পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিক। তিনি বলেছেন, প্রতিষ্ঠানের ১৬ জন শিক্ষক এক বছরে অর্থ আত্মসাৎ করার প্রমাণ পেয়েছি। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় শিক্ষকরা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আপাততে মন্তব্য করব না।


কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারাটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিকের বিষয়টি ইতিমধ্যে পৌর পরিষদের সভায় আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।


বিবার্তা/ফরহাদ/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com