সড়ক সম্প্রসারণে কাটা হচ্ছে শতবর্ষী গাছ
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৮:১৭
সড়ক সম্প্রসারণে কাটা হচ্ছে শতবর্ষী গাছ
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সড়ক সম্প্রসারণে কাটা হচ্ছে শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী বট গাছ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই। স্থানীয়দের দাবী গাছটি রক্ষা করে মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজ করার।


ইউএনও বলছেন, সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে বৈধভাবে কাটা হচ্ছে গাছ।


দেখা গেছে, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মাটিকাটা-জোড়গাছ সড়কের পোস্ট অফিসের সামনে একটি শতবর্ষী বট গাছ অন্য গাছের মতো সড়ক সম্প্রসারণের জন্য কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শ্রমিকরা। এর মধ্যে বট গাছটির কিছু ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের বাধার মুখে গাছটি কাটা বন্ধ রয়েছে। শতবর্ষী এই বট গাছটি রক্ষার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


স্থানীয় জিয়াউর নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, চিলমারী ইতিহাসের পরিচয় বহনকারী চিলমারী পোস্ট অফিস, ভূমি অফিসের সামনে থানাহাট পুরাতন বাজার নাম স্থানে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বট ও পাকুড় গাছ দুটির একটি যা কি না রাস্তায় জায়গা প্রয়োজনের নাম ভাঙ্গিয়ে অতীত স্মৃতি শক্তি ফিরে পাওয়া অক্সিজেন ফ্যাক্টরী, প্রাকৃতিক দূর্যোগেও ছায়া দানকারী বট গাছের ছায়া নামক বট গাছটি  সম্পুর্ণ অপ্রয়োজনে কেঁটে ফেলা হচ্ছে, যা দেখে নিজের বিবেকের কাছে খারাপ লাগা থেকে অপরাধ বোধ অনুভূত হচ্ছে।


তিনি আরও উল্লেখ করে লেখেন, চিলমারী বন বিভাগ, চিলমারী ত্রাণ ও দুর্যোগ শাখা ও চিলমারী পবিবেশ আন্দোলন কমিটির উর্ধতন কতৃপক্ষ ব্যক্তিদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আবেদন এই যে, কালের স্বাক্ষী হয়ে থাকা চিহ্নকে নিশ্চিহ্নে গাছটি কর্তনে সুফলতা জীবিত রাখার কুফলতা বিষদৃষ্টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপনাদের মর্জি। পোস্টটি ব্যাক্তি স্বার্থে নয়, চিলমারীর ইতিহাস রক্ষার প্রয়াস মাত্র, ভাল থাকবেন সকলে।


কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান বলেন, রাস্তা তো দুই পাশে সম্প্রসারিত হবে না। হবে একদিকে। গাছ কাটা পড়লে একদিকের গাছ কাটা পড়বে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উভয়পাশের গাছই কাটা হচ্ছে। এই গাছগুলোর বয়স গড়ে অর্ধশতক। এই গাছগুলো পূর্বপুরুষের মত ছায়া দেওয়ার ভূমিকা পালন করেছে। আমরা চাই যেগুলো কাটা হয়েছে, সেগুলো তো হয়েছেই। বাকি গাছগুলো যেন কাটা না হয়।


সাংবাদিক সাওরাত হোসেন সোহেল বলেন, এ গাছগুলো রক্ষা করা খুব জরুরি। এসব গাছ কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। গাছগুলো অনেক পুরাতন। এসব শতবর্ষী গাছ কাটা হলে গোটা উপজেলায় আর শত বছরেও এমন গাছ হবে না। বট গাছটি এড়িয়ে সড়ক সম্প্রসারণ করা যায় কিনা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন।


উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, গাছগুলো চিলমারীর ঐতিহ্য বহন করে। আমি জনগণের দাবির পক্ষে সহমত পোষণ করি। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে অনেক কিছুই সেক্রিফাইজ করতে হয়। এই সড়কটি গাইবান্ধা জেলার সাথে সংযোগ হবে। ইতিমধ্যে হরিপুর ব্রিজের কাজও শেষের পথে।


চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, এই সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য কাটা হচ্ছে। এটা আন্তঃজেলা সড়ক হবে। চিলমারী হয়ে হরিপুর গাইবান্ধায় সংযোগ হবে। এছাড়া জেলা পরিষদের মাধ্যমে টেন্ডারের আওতায় বৈধভাবে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। আর বিষয়টি এলজিইডি ও সড়ক জনপথ বিভাগ ভালো বলতে পারবেন।


বিবার্তা/রাফি/লিমন/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com