সোনারগাঁওয়ে ১০ কোটি টাকার সরকারি পুকুর দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ২০:০২
সোনারগাঁওয়ে ১০ কোটি টাকার সরকারি পুকুর দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঐতিহাসিক আনন্দবাজার হাটের সরকারি খাস পুকুরের ১৪ শতাংশ জায়গা বালু ভরাটের মাধ্যমে অবৈধভাবে দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। যার প্রতি তলায় আটটি করে দোকান নির্মাণ করা হবে। যা বিক্রি করে সংশ্লিষ্টরা প্রায় দশ কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করবে। দখল করা জায়গার আনুমানিক মূল্য অন্তত দশ কোটি টাকা।


স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওই বাজারের সরকারি খাস পুকুরের ১৪ শতাংশ জায়গা ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। নজরুল ইসলাম রাজধানীর তেজগাঁও রহমতে আলম মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রিন্সিপাল এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ইসলামী শাসনতন্ত্রের সভাপতি সানাউল্লাহ নূরীর মেয়ের জামাই। ভবন নির্মাণ পরিচালনার কাজে নিয়োজিত আছেন, নজরুল ইসলামের শ্যলক ও সানাউল্লাহ নূরীর ছেলে আবুবকর।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল আকারের সরকারি পরিত্যক্ত পুকুরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে ১৪ শতাংশ জায়গায় জবরদখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করছেন শ্রমিকরা। সাংবাদিকদের দেখে ওই কাজের মদদ দাতাদের নির্দেশে নির্মাণ শ্রমিকরা স্থান ত্যাগ করেন। সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ শেষে চলে গেলে পুনরায় কাজ করতে দেখা যায় তাদের।


এ ব্যাপারে জানতে মোবাইল ফোনে নজরুল ইসলামের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।


বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় লোকজন বাজারে জায়গা দখল করে ভবনসহ স্থাপনা নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তাদের সহযোগিতায় অবৈধ নির্মাণকাজ আরও দ্রুত শেষ করা হয়েছে।


হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩-এর আওতায় হাট ও বাজারের সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখলে রাখা অথবা যথাযথ অনুমতি ছাড়া ওই খাস জমির ওপর কোনও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইন লঙ্ঘনকারীর অনধিক এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে 'হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা), ২০২৩' বিলটি উপস্থাপন করা হয়। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এই আইনের গেজেট ও প্রকাশ হয়। অথচ গেজেট প্রকাশিত এই আইন বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের কোন বালাই নেই অবৈধভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে।


উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে মেঘনা নদীর তীরে আনন্দবাজারের সরকারি খাস জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেননি তারা। স্থায়ী এই বাজারে প্রতিদিনের বাজার বসা ছাড়াও প্রতি শনি ও বুধবার সাপ্তাহিক হাট বসে।


এই বাজারে সোনারগাঁ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বন্দর, আড়াইহাজার, কুমিল্লা জেলার মেঘনা, তিতাস, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সমাগম ঘটে। বাজারে প্রায় তিন শতাধিক পাকা-সেমিপাকা ও টিনসেট দোকান রয়েছে। এর আগে বিভিন্ন অসাধু ব্যক্তি অবৈধভাবে বাজারের সরকারি জায়গা দখল করে সেখানে পাকা-সেমিপাকা ঘর তৈরি করে বিক্রয় ও মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছে।


এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে ভবন নির্মাণের বিষয়টি জানতে পেরে কাজটি বন্ধ করা হয়েছিল। পুনরায় যদি নির্মাণ কাজ শুরু করে তাহলে বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বিবার্তা/রোমেল/মোবারক

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com