চসিক কাউন্সিলর ও প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:২৫
চসিক কাউন্সিলর ও প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রাম আকবর শাহ থানার বেলতলী ঘোনায় অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) এক কাউন্সিলর ও তিন প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।


১১ এপ্রিল, মঙ্গলবার রাতে নগরের আকবর শাহ থানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।


মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক। তিনি বলেন, পাহাড়টি খাড়াভাবে কাটার ফলে যে কোনো সময় ভূমিধস হয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।


গত শুক্রবার বিকালে আকবর শাহ এলাকার বেলতলী ঘোনায় এডিবির অর্থ সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে রাস্তা নির্মাণের সাথে রিটেইনিং ওয়াল তোলার সময় পাহাড়ের মাটি ধসে এক শ্রমিক নিহত ও তিনজন আহত হন। এঘটনায় নিহত শ্রমিক মুজিবুর রহমান খোকার স্ত্রী বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তিনদিন পর পরিবেশ অধিদপ্তর আরেকটি মামলা করলো।


মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে চসিকের ৯ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমকে। অন্য আসামিরা হচ্ছেন চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, সিনিয়র সাব-এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ওয়ালী আহমেদ, পাহাড় কাটায় জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এবি-হক ব্রাদার্সের ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী তাকিয়া বেগম এবং মো. ইসমাইল নামে এক শ্রমিক।


আসামিদের মধ্যে চসিকের প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শিক্ষা ছুটি নিয়ে আমেরিকায় অবস্থান করছেন।


মামলার বিষয়ে আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্ত করবে পরিবেশ অধিদপ্তর।


বেলতলী ঘোনায় ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কাজ করছে চসিক। ওই প্রকল্পের আওতায় রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে। পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, সেখানে খাড়া ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা করা হয়। কাটা অংশে ইটের রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই অংশে ৭ এপ্রিল পাহাড় ধসে মজিবুর রহমান খোকা নামে এক শ্রমিক মারা যান এবং তিনজন আহত হন।


পরিবেশ অধিদপ্তর মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কোনো টিলা বা পাহাড় কাটা হবে কিনা, কী পরিমাণ টিলা বা পাহাড় কাটা হবে এবং পাহাড় কাটলে ভূমিধস রোধে কোনো গাইডওয়াল কিংবা রিটেনশন ওয়াল নির্মাণ করা হবে কিনা এ সম্পর্কে কোনো তথ্য সিটি কর্পোরেশন জানায়নি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদনও নেয়নি। পূর্ব অনুমতি ছাড়া পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫–এর ধারা ৬ (খ) লংঘন করা হয়েছে।


জানা গেছে, পাহাড় ধসের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মতিন ও হাছান আহম্মদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ঘটনাস্থলে আনুমানিক ৫০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার সত্যতা পান।


মামলার আসামি চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব বলেন, ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শিক্ষা ছুটি নিয়ে আমেরিকায় অবস্থান করছি। তাছাড়া আমি ওই প্রকল্পের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছি না।


বিবার্তা/জাহেদ/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com