ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গত বছর ১৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ১৮৬ জন। এরমধ্যে ৪৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৭৮ জন। ৫৪ জন অটোরিকশা যাত্রী এবং ৪৮ জন পথচারী এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কটি যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সসম্প্রতি বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে মহাসড়কের এলাকাভিত্তিক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, টাঙ্গাইল জেলায়- বঙ্গবন্ধু সেতুর গোলচত্বরে ১টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত, ১৭ জন আহত, ভূঞাপুরে ৫টি দুর্ঘটনায় ৯জন নিহত, ৮ জন আহত, কালিহাতীতে ২৭টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত, ৭৯ জন আহত, রাবনা বাইপাসে ৪টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ৬ জন আহত, মির্জাপুরে ১৫টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছে।
গাজীপুর জেলায়- জয়দেবপুরে ৮টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত, ৮ জন আহত, গাজীপুর সদরে ১২টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত, ৩ জন আহত, শ্রীপুরে ৯টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত, চন্দ্রায় ১টি দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত, কালিয়াকৈরে ২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত, ১৮ জন আহত, কোনাবাড়িতে ১টি দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত, গাছায় ৫টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ২ জন আহত, রাজেন্দ্রপুরে ২টি দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত, টঙ্গীতে ১৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ৩ জন আহত, চন্দনায় ১টি দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত, কড্ডায় ২টি দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত, ৩ জন আহত ও ফ্লাইওভারের ওপরে ২টি দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ও ১ জন আহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা পর্যালোচনা ও মন্তব্য করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চার লেনে উন্নিত করার পরেও দুর্ঘটনা ও হতাহত কমছে না। এর কারণ মহাসড়কে দ্রুতগতির ভারী যানবাহনের পাশাপাশি হালকা ও স্বল্পগতির অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্যাডেল রিকশা ইত্যাদি চলাচল করছে। এছাড়া মহাসড়কের যেকোনো স্থানে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। যানবাহনের বেপরোয়া গতিও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে কাজ করছে।
সংস্থাটি আরো জানায়, এই পরিস্থিতিতে মহাসড়কটিতে দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলে সার্ভিস রোড নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্পিড ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে।
মহাসড়কে দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে, টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা লেইন আছে। তারপরেও অনেক সময় থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল মূল সড়কে উঠে পড়ে, ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা রোধে জেলা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত জনসচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুতই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দুর্ঘটনার হার কমে আসবে।
উল্লেখ্য, মহাসড়কের কালিহাতী, মির্জাপুর, শ্রীপুর, টঙ্গী এবং গাজীপুর সদর- এই স্পটগুলো অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। এসব স্পটে দুর্ঘটনারোধে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরিভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া রেল পুলিশের তথ্যমতে, টাঙ্গাইল জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে মির্জাপুরের অংশ পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটার টাঙ্গাইল অংশে চলতি বছর ২২টি অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে কাটা পড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিবার্তা/ইমরুল হাসান/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]