একদিন মারা যেতেই হবে, এটা চিরন্তন সত্য। তবে কিছু মানুষের মৃত্যুতে ইতিহাস রচিত হয়, মরে গিয়েও তারা অমর হয়ে যান। তেমনই একজনই সারা ইসলাম। মাত্র ২০ বছর বয়সী এই তরুণী মারা যাওয়ার সময় তার জীবনের স্পন্দন রেখে গেছেন মানুষের মাঝে। তার অঙ্গের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন পেয়েছেন চারজন অসুস্থ মানুষ। যারাও সারার মতোই অসুস্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন।
সারা ইসলামেই দেশে প্রথম ব্যক্তি, যার অঙ্গ ব্রেন ডেথ অবস্থায় সংগ্রহ করে অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই মহৎ কাজে সব থেকে সাহসী ভূমিকা পলন করেছে তার মা, স্কুল শিক্ষিকা শবনম সুলতানা। তার অনুমতির মাধ্যমেই সফল হয়েছে দেশের প্রথম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট।
শবনম সুলতানার সেই সম্মতিপত্র এসেছে গণমাধ্যমের হাতে। এতে বলা হয়, ‘আমি রোগীনীর মা শবনম সুলতানা এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে, আমার মেয়ে সারা ইসলাম, বয়স ২০, মাল্টিপল টিউবেরাস স্ক্লেরোসিস রোগের অপরেশন পরবর্তী জটিলতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে চিকিৎসকরা তাকে ব্রেন স্টিম ডেথ ঘোষণা করে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এ অবস্থায় আমি স্বেচ্ছায় প্রণোদিত হয়ে আমার মেয়ের দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া দান করিতে সম্মতি দান করছি। ইহাতে কোনো প্রকার ভয়ভিতি ও আর্থিক প্রলোভন দেখানো হয়নি। এই অস্ত্রপচার এবং কিডনি ও কর্ণিয়া দান সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা, জটিলতা হলে সেবা প্রদানকারী সদস্য, অধ্যাপক, চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারী দায়ী থাকবে না।’
উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বিএসএমএমইউতে ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদান ও বাংলাদেশে প্রথম সফল ক্যাডাবেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন হয়। ব্রেন ডেথ রোগী সারা ইসলামের দুটি কিডনির একটি মিরপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি অপারেশন থিয়েটারে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। অপর কিডনিটি কিডনি ফাউন্ডেশনে অপর এক রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। এছাড়া সারার দান করা কর্ণিয়া নারায়ণগঞ্জের সুজন (৩০) এবং ফেরদৌস রহমান (৫৬) নামে দুইজনের চোখে কর্ণিয়া স্থাপন করা হয়।
বিবার্তা/এমএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]