কর্ণফুলীতে প্রি-পেইড বিদ্যুৎ মিটার রিচার্জে ‘ডিজিট’ ভোগান্তি
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪, ১৬:২৬
কর্ণফুলীতে প্রি-পেইড বিদ্যুৎ মিটার রিচার্জে ‘ডিজিট’ ভোগান্তি
চট্টগ্রাম থেকে জে. জাহেদ
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারে টাকা রিচার্জ করতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাজার হাজার গ্রাহক।


দুই বা দশ নয়, গভীর মনোযোগের সঙ্গে গুণে গুণে ২৪০ থেকে ৩২০টি পর্যন্ত সংখ্যা প্রবেশ করাতে হয় ‘কি প্যাড’-এর মাধ্যমে। সব ঠিকঠাক হলে তবেই একজন প্রি-পেইড গ্রাহক তার বিদ্যুৎ বিল দিতে পারবেন।


কোনো কারণে সংখ্যার হেরফের হলে তাহলে আবার নতুন করে নামতে হয় ডিজিট প্রবেশের যুদ্ধে। অসাবধানতাবশত দুবার ভুল নম্বর প্রবেশ করালে অ্যাকাউন্টটি একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্লক হয়ে যায়।


সম্প্রতি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর প্রি-পেইড মিটারে টাকা রিচার্জ করতে গেলে টোকেনে এত লম্বা ডিজিট আসছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রাহকরা।


অথচ আগে মিটার রিচার্জের ক্ষেত্রে সাধারণত ২০ ডিজিটের একটি টোকেন পেত গ্রাহকরা। সেই টোকেনটি মিটারে প্রবেশ করালেই রিচার্জ সম্পন্ন হতো।


কিন্তু সম্প্রতি রিচার্জ করতে গেলে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৬ গুণ বেশি অর্থাৎ ৩২০ ডিজিটের একটি লম্বা টোকেন আসে। এই টোকেনের সবগুলো নম্বর মিটারে প্রবেশ করিয়ে রিচার্জ সম্পন্ন করতে হয়। আর তা করতে গিয়ে পরপর তিনবার ভুল হলে মিটার লক হয়ে যাচ্ছে।



চরপাথরঘাটার ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ইসমাইল বিবার্তাকে বলেন, ‘মিটার রিচার্জের ক্ষেত্রে বর্তমানে যা তা একটা অবস্থা। উপরে থাকে মিটার, সেই মিটারে এত বড় টোকেন উঠাতে গিয়ে আমরা নিজেরাই ক্লান্ত এখন। অথচ আগে ছোট একটি কোড আসত। সেই কোড মিটার উঠালেই রিচার্জ সম্পন্ন হতো, এখন তো আর সেভাবে হচ্ছে না। এটা ভোগান্তি না চরম তামাশা।’


ইছানগরের আলী আহমদ নামে এক গ্রাহক বিবার্তাকে বলেন, ‘আমি অল্প পড়াশোনার মানুষ, এত কিছু বুঝি না। এতগুলো নম্বর তুলতে লক করে ফেলি। অফিসের লোক এসে ঠিক করে দেয়।'


ওদিকে, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো অবশ্য বলছে, ধীরে ধীরে গ্রাহকের মিটারগুলো স্মার্ট মিটারে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটা শেষ হলে এমন সমস্যা আর থাকবে না। কিন্তু এর বাস্তবায়ন চলছে খুবই ধীরগতিতে।


কর্ণফুলীর খোরশেদ আলম নামে আরেক গ্রাহক বিবার্তাকে বলেন, ‘আধুনিক এই যুগে ডিজিটাল বাংলাদেশে এটা তো খুবই হাস্যকর। এর ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে আমাদের। যত দিন যাচ্ছে সব কিছু স্মার্ট হচ্ছে। সেখানে বিদ্যুৎ বিল দিতে এত বড় নম্বর। স্থানীয় কয়েকজন জানালেন তারাও ২৪০, ৩২০, ৩৫০ থেকে ৩৬০টি সংখ্যাও প্রবেশ করিয়ে বিল সম্পন্ন করছেন।'


কর্ণফুলীতে দায়িত্বরত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাসেল বিবার্তাকে বলেন, বছরের শুরুতেই একবার গ্রাহকের সমস্ত ডাটা আপডেট হতে এ ধরনের ডিজিট আসে। আবার এত বড় সংখ্যা ব্যবহারের কারণ হলো-একেকটি সংখ্যা দিয়ে গ্রাহকের নাম, ক্যাটাগরি ইত্যাদি তথ্য বোঝায়। সাংকেতিক এই লেখাগুলো জমা হয় বিতরণ কোম্পানিগুলোর সার্ভারে। নতুন করে কোনো তথ্য হালনাগাদের প্রয়োজন না হলে ২০ সংখ্যার ডিজিট দিয়েই রিচার্জ করা যায়।


এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পটিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ বিভাগ) আ স ম রেজাউন নবী বিবার্তাকে বলেন, 'অনেক সময় বিদ্যুতের ট্যারিফ বা মূল্য পরিবর্তন, লোড বৃদ্ধি, নতুন সংযোগ কিংবা কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন হলে তখনই গ্রাহককে এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদেরও সব ডিজিট এন্টার করে বিল দিতে হয়। এটা সামনে একেবারেই কমে যাবে। তখন ভোগান্তি কমবে।'


তিনি আরও বলেন, ‘যদি কারো লক হয়। তখন আমরা অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে তা ঠিক করে দেই। ডিজিটগুলো প্রবেশ করানোর সময় কলম দিয়ে দাগ কেটে এন্টার প্রেস করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।’


বিবার্তা/রোমেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com