মূল্যস্ফীতির বাজারে খরচ কমে না!
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২৩
মূল্যস্ফীতির বাজারে খরচ কমে না!
মাসুম বিল্লা
প্রিন্ট অ-অ+

মূল্যস্ফীতির লাগাম কোনোভাবেই নিম্নগামী হচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দুই মাস কিছুটা কমার প্রবণতা দেখা গেলেও এখন আবার তা ঊর্ধ্বমুখী। তবে গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির বাজার। এর বিপরীতে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি দাম। ক্রেতারা জানান, সবজির দাম কিছুটা কমলেও দুই কেজির সয়াবিন তেলের বোতল মিলছে না। অপর দিকে মুরগি মাংসের দামও গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে।


শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, শালগম ৬৫-৭০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, শিম ৬০-১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, কাচা টমেটো ৬০ টাকা, আকারভেদে লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী মাংসের বাজার। দাম বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালির। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। এসময় ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি ১৯০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০-৫৩০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০-৭০০ টাকা ও ডিম ডজন প্রতি ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।


এছাড়াও নতুন আলু কেজি প্রতি ১১০ টাকা, পুরাতন আলু ৭৫-৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৯০-১২০ টাকা, আদা ১২০ টাকা ও রসুন ২৪০-২৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।


সবজি বিক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, দাম এখন অনেকটায় কমে আসছে। আগে শিম বিক্রি করতাম ২০০ টাকা কেজি এখন ৬০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি কারণ উৎপাদন খরচও বাড়ছে ক্ষেতের মালিকের। তবে এখন দাম কমই সবজির।


অপর দিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। একইভাবে ৫ থেকে ১০ টাকা দাম কমে প্রতি কেজি ছোলা ১২৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় ও প্রতিকেজি চিনি ১২৫ টাকা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম তো কম এখন। তবে আমাদের স্বস্তি নাই। একটার দাম কমলে আরেকটা বেড়ে যায়। এখন সবজির দাম কমছে কিন্তু আলুর দাম বেশি। আবার শুনতেছি সয়াবিন তেলও নাকি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে আমাদের জন্য তো ঘুরে একই। একটার দাম কম দিচ্ছি আবার অন্য জিনিস বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। খরচ তো আর কমে না।


মাংসের বাজারে দেখা গেছে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজিতে।
ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫-১৯৫ টাকা, কক মুরগি ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আকার ও ওজন অনুযায়ী, প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ৮০০-২২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৯০০ টাকা, কাজলী মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, রুই ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকা, কাচকি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


রিকশাচালক কাদের খাঁ বলেন, জিনিসপত্রের দাম হুটহাট বাড়লেও আমাদের আয় বাড়ে না। এর মধ্যে তেল পাওয়া যাচ্ছে না, দু-এক জায়গায় পাওয়া গেলেও দাম বেশি। এখন আমাদের মতো গরিব মানুষরা কী করবে বলেন?


নাবিল নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এভাবে যদি প্রায়ই বাজারে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ে, তাহলে আমরা যারা মেসে থেকে পড়ালেখা করি তারা যাবে কোথায়? সবারই তো কমবেশি আর্থিক সমস্যা আছে। চাইলেই তো আর বাড়ি থেকে যখন তখন টাকা আনতে পারি না। সরকারের উচিত বিষয়টির প্রতি সুনজর দেওয়া।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com