নিষ্ক্রিয় কর্ণফুলী ছাত্রলীগ, মেয়াদোত্তীর্ণরা আঁকড়ে আছেন পদ!
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৭:০৮
নিষ্ক্রিয় কর্ণফুলী ছাত্রলীগ, মেয়াদোত্তীর্ণরা আঁকড়ে আছেন পদ!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের ৩ মাসের আহ্বায়ক কমিটি ৪ বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। নিজেদের কমিটি তো দূরের কথা ৫ ইউনিয়নের কমিটি ভেঙেও কমিটি দিতে পারছে না উপজেলা ছাত্রলীগ।


ফলে, দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগে নেতৃত্বে আসতে পারছে না নবীনরা। এতে ক্ষোভ ও অভিমানে ফুঁসছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা।


বঞ্চিতরা বলছেন, এতে যেমন সংগঠনের এই শাখা গতি হারাচ্ছে, তেমনি দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন ও ইউনিয়ন কমিটি না হওয়ায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে ছাত্রলীগ। তবুও মেয়াদোত্তীর্ণরা আঁকড়ে আছেন পদ!


অন্যদিকে, এর আগে একাধিকবার কমিটি গঠন হচ্ছে এমন গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। ফলে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কর্ণফুলী ছাত্রলীগ।


জানা যায়, গত ২০২০ সালের ১২ মার্চ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দীন ও সম্পাদক মো. আবু তাহের স্বাক্ষরিত ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়। এতে সাজ্জাদ হোসেন সাজিদকে আহ্বায়ক, ১০ জনকে যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ৩০ জনকে সদস্য করা হয়। এই ৩ মাসের কমিটির মেয়াদ প্রায় তিন বছর পার হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নেতাকর্মীদের মাঝে ফাটল ধরেছে।


এছাড়াও গত ৩ জানুয়ারি কর্ণফুলীতে ৫ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ওই সময় কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগ জানিয়েছে, ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং শিগগিরই নতুন কমিটি দেবেন। কিন্তু এখনো ইউনিয়ন কমিটিগুলো দিতে না পারার অভিযোগ রয়েছে আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে।


অনুসন্ধানে খোদ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতারাই তথ্য দিলেন, ঘোষিত ৪১ সদস্যদের আহ্বায়ক কমিটির ভেতরে ৯ জনই বিবাহিত। এরা হলেন-যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুদ্দীন, মোহাম্মদ মহসিন, সাঈদ হোসেন রিমন, সাইদুল ইসলাম টুটুল, মো. কামাল উদ্দিন ও কফিল উদ্দিন। সদস্য খোরশেদুল আলম টিপু, তৌহিদুল ইসলাম, তাসকিন শাকিব ও মো. আবুল বশর ছোটনসহ প্রমুখ।



এছাড়াও কমিটির অনেকেই মামলার আসামি। কেউ কেউ এইচএম স্টিল মিলস, বেসরকারি ব্যাংক, কেইপিজেড, সিমেন্ট কোম্পানি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী। নেই কারো ছাত্রত্ব। রয়েছে অনেকের পিঠে আবার বিএনপি পরিবারের তকমাও।



উপজেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতা, অগণতান্ত্রিক ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে তারা ক্ষুব্ধ। আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে জেলা নেতারা নীরব। ফলে, নেতৃত্ব বিকাশ এবং সংগঠনে গতিশীলতা তৈরি হচ্ছে না। সম্প্রতি, জেলা কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়েছে।


অন্যদিকে, কর্ণফুলী ছাত্রলীগের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি এ যাবত কোন পরিচিতি সভা ডাকতে পারেননি। কমিটির আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের সাথে কোন সমন্বয় নেই। একেকজন একেক নেতারা অনুসারী। ভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত। কার্যক্রম অনেকটা ফেসবুক নির্ভর।


ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সম্পাদকরা বলেন, নতুন কমিটি দেবেন বলে আমাদের কমিটিগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু কোন খবর নাই। কমিটি না হওয়ায় অনেক ছাত্রলীগ কর্মী হারিয়ে গেছে। ইউনিয়নে দলীয় কোনো প্রোগ্রাম নাই। আমরা দ্রুত উপজেলা ছাত্রলীগের এই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।


এ বিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বিবার্তাকে বলেন, ‘আমাদের কোনো অবহেলা নেই। আমরা বারবার কমিটি দিতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছি এপিএস (সাবেক ভূমিমন্ত্রীর) এর অযৌক্তিক হস্তক্ষেপে। এবং ছাত্রলীগকে এপিএস এর নির্দেশনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কোন দলীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠানে প্রায় ১ বছর যাবত দাওয়াত দিচ্ছে না। ফলে, নানা কারণে কমিটি দিতে পারি নাই। তবে ঈদের পর কমিটি করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি।


ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে গতিশীল করার ঘোষণায় ২০১২ সালে সর্বশেষ জসিম উদ্দীনকে সভাপতি ও জীবন মঞ্জুর আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি দিয়েছিলেন জেলা ছাত্রলীগ। বর্তমানে উপজেলায় আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও নেই কর্ণফুলীর পাঁচ ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ কমিটি।


বিবার্তা/জাহেদ/রোমেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com