দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমির খামার ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত ‘র্যাপটাইলস ফার্ম’ বা ‘কুমিরের খামার’।
নতুন আঙ্গিকে সাজানো খামারটি দেশি-বিদেশি পর্যটক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করবে-এমনটাই ধারণা হাইকোর্টের নির্দেশনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালনা পর্ষদের।
আন্তর্জাতিক মানের এই খামারটিতে ২ হাজার ৫২৬টি ছোট-বড় ও বাচ্চা কুমির রয়েছে। পর্যটক টানতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার কর্মসূচির পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন পিকনিক হল, সেমিনার কক্ষ, কেন্টিন, রেস্টহাউজসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
২০০৪ সালে ভালুকা উপজেলার হাতিভের গ্রামে ১৩.৪০ একর জমিতে চৌদ্দটি পুকুর খনন করে রেপটাইলস ফার্ম গড়ে তোলেন মোস্তাক আহমেদ ও ব্যবসায়ী মেজবাউল হক। পরে মালয়েশিয়া থেকে ৭৫টি বড় কুমির সংগ্রহ করে ছাড়া হয় ওই সব পুকুরে।
খামারটিতে কর্মচারী রয়েছেন ২৫ জন। খামারে কুমিরের খাবারসহ প্রতি মাসে প্রায় আট-দশ লাখ টাকা খরচ হয়। কুমিরের চামড়া লেডিস ব্যাগসহ ওয়ালেট তৈরির কাজে ব্যবহার হয়। ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপানে কুমিরের চাহিদা রয়েছে। ভালুকার কুমিরের খামার থেকে এরইমধ্যে জাপানে পাঁচবার কুমিরের চামড়া এবং ২০১০ সালে জার্মানিতে হিমায়িত পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে।
খামার পরিচালনা পর্ষদের এমডি এনাম হক বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর খামারে এসে দেখি কুমিরগুলোর অবস্থা নাজুক। কুমিরগুলোর খাবার ও চিকিৎসার অভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। অনেক কুমিরের শরীরে ঘা। খাবার ক্রয় বা চিকিৎসা করার মত টাকা নেই। এসব সংকটের কথা তুলে ধরলে হাইকোর্টের নির্দেশে ন্যাশনাল লিজিং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেডকে আরও ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ দেয়। ঋণের ৩৫ শতাংশ ছাড় হয়েছে। ওই টাকা থেকে কুমিরের খাবার কেনা কর্মচারীদের বেতন ও বিদ্যুৎ বিলসহ জরুরি ব্যয় মেটানো হচ্ছে।
এনাম হক বলেন, গত 8 মাসে কুমিরের ৯০০টি বাচ্চা জন্ম হয়েছে। তাই এখন কুমিরের খাবার কিনতে টাকা সংগ্রহের জন্য খামার থেকে শিক্ষামূলক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। খামারটিকে পর্যটন আকর্ষণ উপযোগী করতে এরই মধ্যে কিছু সংস্কার কাজ করা হয়েছে, আরো কাজ চলছে। এখানে শিশুদের বিনোদনের জন্য হরিণের ব্যবস্থা করা হবে। গড়ে তোলা হবে কুমির রিসার্স সেন্টার ও মিউজিয়াম। ওই খামার থেকে বিদেশে শুধু চামড়া রপ্তানি করার অনুমতি রয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া চামড়ার পাশাপাশি কুমিরের বাই প্রোডাক্টগুলো রপ্তানি অনুমতি পেলে ওই খামারের মাধ্যমে বর্তমানের চেয়ে আরো দেড় গুণ রাজস্ব আয় করা সম্ভব।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]