শিরোনাম
মন হারাই ধরন্তি হাওরে
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৪৮
মন হারাই ধরন্তি হাওরে
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

হাওর ও বিলে ভ্রমণ করতে যারা বেশি পছন্দ করেন তাদের জন্য অন্যতম একটি হাওর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ধরন্তি হাওর। এর পশ্চিমে মেঘনা আর পূর্বে তিতাস নদী। মধ্যখানে বিশাল জলাভূমি নিয়ে অবস্থিত ধরন্তি। বর্ষা বাংলার প্রকৃতি সাজে অপরূপ সাজে। তার রূপের আলোকছটা পড়ে ধরন্তির বুকেও। ধরন্তি তখন ফুলে ফেঁপে উঠে পানিতে।


বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত হাওর থাকে পানিতে পূর্ণ। হাওরের পানি সূর্যের আলোক রশ্মি তখন চিক চিক করে উঠে। হাওরের বুক কেটে চলে যাওয়া সরাইল-নাসিরনগর সড়কের দুধারে পানি তখন উপচে পড়ে। মূলত ধরন্তির সৌন্দর্য উপভোগে এই সড়কেই জন সমাগম বেশি হয়। পড়ন্ত বিকেলে মৃদু বাতাস আর দু ধার ব্যাপী পানি জীবন মনকে অবসাদ মুক্ত করে প্রশান্তিময় করে তোলে।



ধরন্তির অপরূপ জলরাশি পর্যটদের মুগ্ধ করে


সরাইল নাসিরনগর সড়কটি কয়েক মাইল দীর্ঘ হওয়ায় এর মাঝ দিয়ে হাওরের বুকে অনেক দূর হেটে যেতে পারেন। এছাড়া মোটর সাইকেলে চড়ে হাওরের দুধারের সৌন্দর্য চমৎকার উপভোগ করতে পারেন। ধরন্তির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কেউ কেউ একে মিনি কক্সবাজার বলে থাকে। প্রতিদিন শত শত ভ্রমণ পিপাসীর তৃষ্ণা মেটাচ্ছে এই হাওর। ঈদ পূজা বিভিন্ন উৎসব ঘিরে এখানে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।


এটি মূলত একটি পিকনিক স্পট। চাইলে আপনিও ছুটির দিনে পরিবার বন্ধু বান্ধব নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এখানে। রাজধানী থেকে মাত্র তিন ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই ধরন্তি হাওর। দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যায়।



ধরন্তি হাওরের জলরাশি যেনআকাশের সাথে মিশে গেছে


ধরন্তির বুকে নৌকা নিয়ে ঘুরতে চাইলে তাও পারবেন। সড়কের পাশেই নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। নৌকায় ভ্রমণের খরচও সাশ্রয়ী। তবে এখানে দোকানপাট বা বসার কোনো স্থান এখনো গড়ে উঠেনি।


আশপাশে ঘোরার স্থান:


কালভৈরব মন্দির


হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান তীর্থক্ষেত্র হিসেবে কালভৈরব মূর্তিটির অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়ীয়া শহরের অদূরে মেড্ডা এলাকায়। তিতাস নদীর কূল ঘেঁষে অবস্থিত কালভৈরব একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী মন্দির হিসেবে বিখ্যাত। মন্দিরটির প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে ২৮ ফুট উঁচু কালভৈরব বা শিব মূর্তি। বিশাল আকৃতিবিশিষ্ট ও চোখ ধাঁধানো মূর্তিটি ১৯০৫ সালে তৈরি করা হয়।



কালভৈরব মন্দিরেরমূর্তি


হাওরের রাস্তা ধরে কিছুদূর সামনে যাবেন। ওখানে সেতু চোখে পড়বে। ২য় সেতুটা থেকে স্পিড বোটের আসা যাওয়া। ২০ টাকা জনপ্রতি ভাড়ায় ঘুরে আসতে পারেন তিতাস পাড়ের কাল ভৈরব মন্দিরে।


রাজা কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরীর রাজবাড়ী


প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর শেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’য় আপনার দেখা রাজ বাড়িটি হচ্ছে রাজা কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরীর রাজবাড়ী। জরাজীর্ণ এক রাজ বাড়ির দেখা পাবেন এখন। স্থানীয়ভাবে এটি বড় বাড়ি নামে পরিচিত। বাড়িটার সম্মুখ থেকেই হাওরের শুরু। রাজ বাড়ির ঘাটে দিয়ে নেমে হাওরে গোসলও সেরে নিতে পারেন। আর পাশেই বাজার থাকায় হাওরের তাজা মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারেন।


যেভাবে যাবেন


ঢাকা থেকে ধরন্তি খুবই স্বল্প সময়ে যাওয়া আসা করতে পারেন। যাত্রাবাড়ী বা সায়েদাবাদ থেকে বাসে উঠে নামবেন সরাইল বিশ্বরোড। ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় চলাফেরায় সোহাগ, তিশা ও তিতাস পরিবহনের বাস রয়েছে। বিশ্বরোড থেকে ধরন্তি যেতে অটো রিকসা বা সিএনজি ভাড়া পড়বে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। আর চাইলে ট্রেনে করেও যেতে পারেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। ভাড়া প্রায় ১৪৫ টাকা।


এছাড়া সরাইল বিশ্বরোড থেকে আগে কাল ভৈরব ঘুরতে চাইলে অটো রিকসা ভাড়া পড়বে ১০ টাকা। আর রাজা কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরীর রাজবাড়ী ঘুরতে যেতে বিশ্বরোড থেকে বাসে করে মাধবপুর। বাস ভাড়া ৩০ টাকা। মাধবপুর থেকে বাকিটা পথ যেতে হবে সিএনজিতে করে। ভাড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা।


যেখানে থাকবেন


এখানে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল পেতে আপনাকে যেতে হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে। এছাড়া নাসিরনগরে ডাক বাংলোতেও থাকতে পারেন। আর বাজেট ট্রিপের ক্ষেত্রে কেউ কম খরচে থাকতে চাইলে সদরেও থাকতে পারেন খোঁজ নিয়ে এছাড়া সরাইল বিশ্বরোডে ৩০০/৪০০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com