শিরোনাম
ফেরাউনের ডানায় ওড়েন মন্ত্রীরা
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২১, ০৮:২০
ফেরাউনের ডানায় ওড়েন মন্ত্রীরা
পীর হাবিবুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫৬০টি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করছেন। করোনার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের মধ্যেও ৫০টি মসজিদের উদ্বোধন করেছেন। মোমিন-মুসলমানদের নামাজ আদায়ই হবে না, এসব মসজিদ ঘিরে ইসলামী সাংস্কৃতির চর্চাই হবে না, ইসলামী স্থাপত্যশৈলী ওই সব এলাকার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে। এত বড় আয়োজনের বিষয়ে যারা কথায় কথায় ইসলামের জন্য জান কোরবান করেন, তাদের দেখিনি এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতে। এমনকি আওয়ামী লীগের প্রচার সেল বরাবরের মতোন ব্যর্থ হয়েছে। এ অর্জনকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাসিয়ে দিতে পারেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর স্বল্পকালীন শাসনামলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বের মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েতের জন্য তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমার জায়গা করে দিয়েছিলেন। সেসবেরও কখনো প্রশংসা হয় না। কারণ বঙ্গবন্ধু পরিবার আল্লাহর প্রতি অনুগত এবং ধর্মচর্চায় অভ্যস্ত মুসলমান হলেও তাদের রাজনৈতিক দর্শন অসাম্প্রদায়িক। তারা ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে। তাই বঙ্গবন্ধু যা করেছিলেন, শেখ হাসিনা যা করছেন তার প্রশংসা মননে-মগজে সাম্প্রদায়িক লোকজনের মুখে শোনা যায় না। তারা ধর্মের নামে উগ্র হিংসা-বিদ্বেষে ভরা মন নিয়ে পথ হাঁটে। জোব্বা পরে। তবে সারা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান এজন্য আনন্দিত। আওয়ামী লীগের প্রচার সেল এ অর্জন কেন ঘরে তুলতে পারে না, জানি না। তাদের দুর্বলতা হামেশাই নানান ঘটনায় দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে লন্ডনভিত্তিক হেডকোয়ার্টার থেকে আমেরিকা, কানাডাভিত্তিক বিএনপি-জামায়াতের পোষ্যরা আর্থিক অনুদান পেয়ে যে বিকৃত কদর্য কুৎসিত প্রচারণা চালায়, চরিত্রহননের জঘন্য মিথ্যাচার করে তার জবাবটাও দিতে পারে না। পারে কেবল দেশে নিজের স্বজনদের পিছু লাগতে। ওইসব পোষা কুকুর খামোখা ঘেউ ঘেউ করে।


তাদের ঔদ্ধত্য ও বেয়াদবির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিএনপির এ দেশের অনুসারী বিকৃতরাও চালিয়ে যায়। হিংস্র সাপের মতোন তারা ফণা তুলে ফোঁসফোঁস করে। যেন একবার যদি ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে বিষের ছোবলে গোটা দেশ বিষাক্ত করে দেবে। বিএনপি মনে করে এসব কর্মকান্ড তাদের হয়ে যারা করছে তারা বাপের বেটার কাজ করছে। একবারও বিবেচনায় নেয়নি বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে তাদের যে একের পর এক ভয়ংকর রাজনৈতিক হত্যাকান্ড, সিরিজ বোমা হামলা, বাংলা ভাইদের বীভৎস বাগমারা শাসন, একুশের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র আর সীমাহীন দুর্নীতি অপশাসন মানুষকে নতুন করে গা শিউরে ওঠা ভয় পাইয়ে দেয়। জানান দেয় জামায়াতসহ উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে ক্ষমতায় এলে প্রতিশোধ আর প্রতিহিংসার ক্রোধে জিঘাংসার আগুনে দেশে বড় ধরনের রক্তপাত ঘটে যাবে। একুশের গ্রেনেড হামলা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদলই স্তব্ধ করেনি, গণতন্ত্রও সংকুচিত করেছে। সেই ভয়াবহতা মানুষ আর দেখতে চায় না। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে এক কঠিন দুঃসময় অতিক্রম করছে সত্য। ঘুরে দাঁড়ানোর মতোন পথ এখনো তারা খুঁজে পায়নি, তা-ও সত্য। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাকে অসীম ধৈর্য নিয়েই গণতন্ত্রের পথে উঠে আসতে হবে। গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারের পোষাকুকুর পুষে নয়। এ দলের চেয়ারপারসন অসুস্থ। তিনিই দলের জনপ্রিয়তার উৎস। দলের নেতৃত্ব আবার দিতে পারবেন সে সম্ভাবনা নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দন্ডিত নির্বাসিত লন্ডন পলাতক আসামি। সেখানে বসে দলের নেতৃত্বদানে ভুল আর ভুল। তিনি রাজনীতিতে যে সাহস দেখাতে হয় তা দেখাতে পারেননি। দেশে ফেরেননি। দেশে তার নেতা-কর্মীরা জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ করে। তিনি লন্ডনে বিলাসী জীবন ভোগ করেন। রাজনীতির বিবর্ণকালে সামনে এসে তিনি দলকে বড় কিছু অর্জন করে দিতে পারবেন এমন সম্ভাবনাও নেই। আওয়ামী লীগ যেমন ১৯৭৫ থেকে ’৮১ কঠিন দুর্যোগে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। ’৮১ সালে শেখ হাসিনা আসার পর ১৫ বছর সংগ্রাম শেষে ক্ষমতায় এসেছিল। বিএনপিকে সেভাবেই কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। ছাত্রদল বলে সংগঠনটি শেষ হয়েছে শিক্ষাভিত্তিক ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব না দেওয়ার কারণে। এর মধ্যেও দলে লন্ডন থেকে কমিটি চাপিয়ে দেওয়া হয়। মনোনয়ন বাণিজ্য হয়। কমিটি বাণিজ্য হয়। এসব বিএনপির রাজনীতির অভিশাপের পাল্লা ভারী করছে। বিএনপিতে অনেক উদার গণতন্ত্রী নেতা আছেন, দেশপ্রেমিক গণমুখী কর্মীবান্ধব রাজনীতিবিদ আছেন। তাদের হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও রণকৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দিয়ে দলকে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে কোন্দলমুক্তভাবে সাজিয়ে তোলা যায়।


বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তি একসময় উর্বর গৌরবের ছিল। ভারসাম্যের ছিল। রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হয়েছে সামরিক শাসন-উত্তর গণতন্ত্রের জমানায় আদর্শিক তারুণ্যনির্ভর ছাত্র রাজনীতির দাফন ঘটিয়ে। এক দিনে তা হয়নি। দিনে দিনে হয়েছে। সামরিক শাসন জমানায় সব দলেই জাতীয় নেতাদের নেতৃত্ব ছিল চোখে পড়ার মতো। দেশ ও মানুষের কল্যাণে তাদের সেবার মনোভাব ছিল। গণমুখী চরিত্র ছিল। স্বাধীনতা-সংগ্রামের নেতাদের বহর ছিল মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগে। একেকজন নেতা জাঁদরেল বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন। সামরিক শাসন-উত্তর গণতান্ত্রিক জমানায়ও ছিল রাজনীতিতে তাদের নায়কোচিত বিচরণ। কর্মীদের ওপর প্রভাব ছিল। জনগণের ওপর আস্থা ছিল। তারা অত্যাচার-নির্যাতন জেল-জুলুম সয়ে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ হেঁটে উঠে এসেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বামপন্থি রাজনৈতিক শিবিরেও ছিল যেমন আদর্শিক কর্মী তেমনি একেকজন নির্লোভ নেতা। এখন বামপাড়ার বাতি নিভে গেছে। আওয়ামী লীগেরও স্বাধীনতা-সংগ্রামী নেতাদের একটা বড় অংশ চিরনিদ্রা নিয়েছেন। এতে রাজনীতিতে তাদের শূন্যস্থান আর পূরণ হয়নি। যে কজন স্বাধীনতা-সংগ্রামী আওয়ামী লীগ বা ছোট দলে বেঁচে আছেন, তারা যেন বেঁচে আছেন বলেই রাজনীতি করেন। তাদের বীরত্ব এখন ইতিহাস, মতামত উপেক্ষিত। অনেকে বলেন, আওয়ামী লীগ ও সরকারে শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। আসলে মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শের রাজনীতির ওপর দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করলে চোখ বুজেই বলা যায়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনা। তাঁর কোনো উত্তরাধিকার নেই। বামপাড়ার রাজনীতির সর্বনাশ দেশের মানুষের জন্য, রাজনীতির জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। সাধারণ মানুষের জন্য কথা বলার, তাদের অভাব-অভিযোগ তুলে আনার কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে গেছে। আমাদের রাজনীতি হয়ে গেছে আদর্শহীন। বর্ণহীন। নেতাহীন। আদর্শিক কর্মী সংগঠকহীন। ক্ষমতানির্ভর হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। আর প্রশাসননির্ভর হয়ে পড়েছে সরকার। সংসদ আছে নিষ্প্রাণ, বিতর্কহীন। মন্ত্রীরা অধিকাংশ দাপুটে নন। আমলা নিয়ন্ত্রণ করবেন কি, আমলাদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সেবকের চরিত্রে দাঁড় করাবেন কি, নিজেরাই অনেক সময় নিয়ন্ত্রিত হন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাম ফেরাউন। সর্বশক্তিমান আল্লাহর সমকক্ষ দাবি করা ফেরাউনের করুণ পরিণতি সবার জানা। এক মন্ত্রী বলে বসলেন, ফেরাউনই আমলাতন্ত্রের সঙ্গে পারেনি। আর তারা পারবেন কীভাবে। গণতন্ত্র ও সুশাসন পরে। ফেরাউনের উদাহরণ মেনে নেওয়া যায় না। মন্ত্রীদের ব্যক্তিত্ব নেতৃত্ব সততা দক্ষতায় আমলাতন্ত্র সামাল দেওয়া যায়, অন্য উপায়ে নয়। মন্ত্রীরা যেন আজ ফেরাউনের ডানায় ওড়েন। আমলারা ফেরাউনের ডানা। জনগণের সেবক না হয়ে সরকারি কর্মকর্তারা এখন ক্ষমতার মালিক বা প্রভু। এটা রাজনৈতিক ঐতিহ্যের জন্য লজ্জার। এটা রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব। এটা সংবিধানবিরোধী। রাষ্ট্র পরিচালনায় আমলাতন্ত্রের বিকল্প নেই। কিন্তু তাদের সীমা লঙ্ঘন করতে না দেওয়া মন্ত্রীদেরই কাজ। মন্ত্রণালয়ের প্রধান নির্বাহী মন্ত্রী, সচিব নন। মন্ত্রীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অনেক জায়গায় মাঠ প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তারাও সীমা লঙ্ঘন করেন। যাক, বলছিলাম রাজনৈতিক শক্তির কথা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজ দলকেই আগলে রাখছেন না, আরও কিছু দলকে অভিভাবক হিসেবে টিকিয়ে রাখছেন। কিন্তু রাজনীতি যদি রাজনীতিবিদদের হাতে না থাকে, তাহলে কীভাবে হবে, রাজনীতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখা যাচ্ছে। এটা শুভ আলামত নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি উঠে আসছে। নির্বাচন কমিশন বর্তমানে এমন জায়গায় যে, মানুষ বীতশ্রদ্ধ। বিদায় হলেই খুশি। প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করা দরকার। তাই বলে অবসরে যাওয়া চুক্তিভিত্তিক অনুগত সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে নয়।


বিএনপির মঙ্গলের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কত পরামর্শ দেন, আহাজারি করেন নিজের খেয়ে, কেউ কথা শোনে না। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না যেন বিএনপির মুখপাত্র। সবখানে বিচরণ করেন। মান্নার মতোন ডাকসু বিজয়ী সৃজনশীল নেতা কীভাবে সরকারের বিরুদ্ধে জিততে গিয়ে উগ্র সাম্প্রায়িক শক্তিকে এককাতারে ঐক্যবদ্ধ হতে ডাক দেন, বুঝি না। ড. আসিফ নজরুল কথা বললে জামায়াতের মুখপাত্র খুঁজতে হয় না। তারা বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতসহ সবাইকে নিয়ে আদর্শহীন ঐক্যে ক্ষমতায় যেতে চান। তরুণ প্রজন্ম সরকারের অনেক কর্মকান্ডে নাখোশ হলেও এমন ঐক্যের প্রতি কখনো সমর্থন দেবে না। দেশের মানুষও সজাগ সতর্ক হয়ে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়াবে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আরও কিছু দলকে নিজেদের জোটে শরিক করতে পারে। একাত্তরের বীর যোদ্ধা ও ’৭৫-এর দুঃসাহসী প্রতিরোধযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের আওয়ামী লীগের বাইরে যাওয়া উভয় পক্ষের জন্য দুঃখজনক। তাঁকে টেনে আনা যায়। বাইরে থাকা কত আওয়ামী লীগ নেতা রয়েছেন নানা ঘটনায় ছিটকে পড়া। তাঁদের পাশে আনা যায়। বাঘা সিদ্দিকীর মতোন ত্যাগের নজির কজন রেখেছেন সেই মহাদুঃসময়ে? বামপাড়ার পতন হলেও জামায়াত এখনো একটি শক্তিশালী দল। ক্যাডারভিত্তিক নেতা-কর্মীরা দলের প্রতি, আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে কাজ করছেন। বিএনপি এতটা সংগঠিত নয়, জামায়াত এত প্রতিকূলতায় যত সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত। বিএনপি যদি মনে করে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর প্রেসক্রিপশনে জামায়াত, উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি ও গণবিচ্ছিন্ন অতিবাম ও বিচ্ছিন্নদের নিয়ে ঐক্যের পথে সামনের রাজনীতির পথ পাড়ি দেবে, তাহলে আবার মুখ থুবড়ে পড়বে।


এসব কথা বললে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের ও ভারতের দালাল বলা হয়। আরে দালাল তো হয় সুবিধাভোগী শ্রেণি। ছোটবেলা থেকেই জাতির মহত্তম নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শেই পথ হাঁটি। অনেকে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেন না। কোনো সুবিধা সরকার থেকেই নিইনি। আর একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত যে অবদান রেখেছে, সেই থেকে তারা আমার প্রিয় বন্ধুদেশ। পাকিস্তান গণহত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে, তাকে আমরা পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছি। তারা আমার শত্রু। এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। একটি বর্বর সাম্প্রদায়িক জঙ্গিকবলিত ব্যর্থ রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রকে যারা নিজেদের আঁতুড়ঘর মনে করে তারাই আমাদের ভারতের দালাল বলে। আঁতুড়ঘর নিয়ে মুখে হাসি জঙ্গিদের খুনিদের ধর্ষকদের উত্তরসূরিরা। তাই যুদ্ধ চলমান। ওদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির রিপোর্টের সঙ্গে আমি যেমন সম্পূর্ণ একমত নই তেমনি তার জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা-ও গ্রহণযোগ্য নয়। মন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির অভিযোগ করাটা একটা প্যাসনে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, বরং অন্য খাতের কোটি টাকা কানাডায় চলে গেছে। স্বাস্থ্য খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কারণে দুর্নীতি যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তা মন্ত্রী কীভাবে বিচ্ছিন্ন অসচ্ছতার খবর বলেন? ঠিকাদাররা যে বাজারদরের চেয়ে শতগুণ বেশি দামে পণ্য সরবরাহ করেন, মেশিন দেন, তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কারণে। একজন ঠিকাদার স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা করে টেন পারসেন্ট মুনাফা নিয়ে ঘরে ফিরবেন সে অবস্থা ঊর্ধ্বতনরা রাখেননি। তাদের পনেরো পারসেন্ট কমিশন দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য খাত ভয়াবহ দুর্নীতির খাতে পরিণত আজ। এক মোতাজ্জেরুল হক মিঠু কয়েকটি কোম্পানির নামে সবাইকে ভাগ-বাটোয়ারা দিয়ে মোটা অঙ্কের হরিলুট করে নিয়ে যাওয়ায় সে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছিলেন, বিদেশে রাজনীতিবিদরা নন, সরকারি কর্মকর্তারাই বাড়ি-অর্থ করেছেন। এখানে রাজনৈতিক কর্মী হলে কী হারে ট্রল হয়। কই কেউ তো একজন সরকারি কর্মকর্তার বাড়ির ছবিসহ ট্রল করেননি? রাজনীতিবিদদের চরিত্রহনন সহজ। সরকারি কর্মকর্তা হলে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ কেমন কথা। আর মন্ত্রী যদি এমন করে সাফাই গান তখন তাঁর কর্মকর্তা থেকে ড্রাইভার আরও বেপরোয়া হবে দুর্নীতিতে- এটাই নিয়ম। সংসদীয় কমিটির একটি তদন্ত হওয়া উচিত। মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন- কতটি জেলা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন? ডাক্তার আছে বা থাকার? টেকনিশিয়ান আছে বা থাকার? ভবন আর মেশিনেতে ঠিকাদারদের লাভ। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হয় না। আর অন্য কোন খাতের টাকা কানাডায় কীভাবে গেল জবাব দেবেন কি?


লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।


বিবার্তা/এসএ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com