আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি : আলী রীয়াজ
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ১২:৫২
আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি : আলী রীয়াজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘গত সাতদিন ধরে আমরা আলোচনা করেছি। বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও সত্যি কথা হচ্ছে, আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি।’


রবিবার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার সপ্তম দিনের বৈঠক শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।


আলী রীয়াজ বলেন, এই অগ্রগতির জায়গাটা অর্জন করা দরকার এই কারণে, আমরা কেউই চাই না আগের জায়গাটায় ফিরে যেতে। এটা আগামীকাল, আগামী দিনের বিষয় না। এটা দীর্ঘদিনের বিষয়।


তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হবো। যে ব্যবস্থা ফ্যাসিবাদী শাসনকে তৈরি করেছে, তার কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো আমাদের করতে হবে। এই সংকল্প থেকে সমস্ত কিছু পাশে রেখে আমরা সমবেত হয়েছিলাম। আপনাদের কর্মীরা প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়ন সহ্য করেছেন। সেই রক্তের ওপর পা রেখে আমরা এখানে এসেছি।


কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, কমিশন আপনাদের প্রতিপক্ষ না। কমিশন আপনাদেরই অংশ, আমরা একটা দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। আপনাদের অবস্থানের কারণে কমিশনের নমনীয়তা প্রকাশিত হয়েছে। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই, আপনারাই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। আপনাদের মধ্য দিয়েই এক সময় দেশ শাসিত হবে।


তিনি বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদের ক্ষেত্রে কমিশনের যে প্রস্তাব ছিল সেখান থেকে কমিশন আলোচনার মধ্যদিয়ে সরে এসেছে। স্থায়ী কমিটিগুলোর বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাব ছিল এক রকম, কিন্তু আমরা আলোচনার মধ্য দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত এক জায়গায় এসেছি, সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। উচ্চকক্ষের বিষয়ে দুটি প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে একটি, ১০৫ জন সদস্যকে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দেবেন। আপনারা এই বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন। সঙ্গতভাবে কমিশন এই জায়গা থেকে সরে এসে ১০০ জন সদস্যের উচ্চকক্ষ তৈরির বিষয়ে একমত হতে পেরেছি। মূলনীতির ক্ষেত্রে কমিশনের কিছু প্রস্তাব ছিল সংবিধান সংস্কার কমিশনে। সেখানে আমরা আলোচনা করেছি, অনেকটা অগ্রসর হয়েছি। আরও আলোচনা করব।


আলী রীয়াজ বলেন, আর এক দিন পর জুলাই মাস। কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা আন্তরিক থাকতে চাই। জুলাই মাসের মধ্যেই যেন আমরা একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে পারি। সেই প্রচেষ্টায় আমাদের একটা স্বপ্ন ছিল। আমরা আশা করেছিলাম আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতেই সবাই মিলে সনদে স্বাক্ষর করতে পারব। সেটা কতটা সম্ভব হবে তা আপনাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা খানিকটা শঙ্কিত যে, সে জায়গায় যাব না। তবে এটা আমরা বলতে পারি জুলাই মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়ার একটা পরিণতির দিকে যেতে হবে।


তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে এগিয়ে যেন কোনো ধরনের সংবিধান সংশোধন না হয়, সেটা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করা দরকার। ব্যক্তির ক্ষমতা সীমিত করা প্রয়োজন হচ্ছে এই কারণে, শেষ পর্যন্ত শাসনের ক্ষেত্রে এক ধরনের ব্যক্তিতান্ত্রিকতা তৈরি হয়েছিল এবং তার আশঙ্কাকে আমরা উড়িয়ে দিতে পারছি না। সাংবিধানিকভাবে এ রক্ষাকবচগুলো আমাদের তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।


আজকের সভায় আলোচনার বিষয়গুলো হচ্ছে— সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট; উচ্চকক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com