টানা বৃষ্টিতে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৮
টানা বৃষ্টিতে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপের ফলে দেশের কয়েক জেলায় এখনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে নিমজ্জিত হয়েছে উপকূলের নিম্নাঞ্চল।মাঝরাত থেকেই দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে উপকূলে। এতে তলিয়েছে বাগেরহাট সদরসহ জেলাটির উপকূলের নিম্নাঞ্চল। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে উন্নতি হচ্ছে আবহাওয়ার।


গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টিপাত আরো দুই এক দিন চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।


টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে পৌর এলাকার গদাইবিল, কামালনগর, ইটাগাছা, পলাশপোল, মধুমোল্লারডাঙ্গী, রাজার বাগান, মুন্সীপাড়া, রথখোলা, কাটিয়া, সুলতানপুর, বাঁকাল, খড়িবিলা, বদ্দিপুর কলোনীসহ পৌরসভার বিভিন্ন স্থানের নিম্নাঞ্চল। বৃষ্টির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। বিশেষ করে দৈনন্দিন উপার্জনের উপর নির্ভরশীল দরিদ্র পরিবারগুলো নিদারুন কষ্টে পড়েছেন।


বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত। পানিতে ভেসে গেছে বেশ কিছু মাছের ঘের, পুকুর ও ফসলি জমি। নিমজ্জিত হয়েছে নবেশ কিছু ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। জলবদ্ধতায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ভেলাই করে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। নর্দমা আর বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে লোকালয়। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেছে নোংরা পানি। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানির সংকট আর বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে এসব এলকা। বেড়েছে সাপ পোকা মাকড়ের উৎপাত।


সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, গত দুই দিনে (৪৮ ঘন্টায়) সাতক্ষীরায় ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে তিনি আরও জানান।


এদিকে, ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন খুলনার রাস্তাঘাট-অলিগলি। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে নগরীর দোলখোলা, মিস্ত্রিপাড়া, মৌলভীপাড়াসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল।


এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। খুলনা আবহাওয়া অফিসের মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ।


তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত যশোরের জনজীবন। এরইমধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে শহরের বেশিরভাগ এলাকা। পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।


স্থবির জনজীবন; চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকেও বের হচ্ছে না কেউ। এতে আয় কমেছে খেটে খাওয়া মানুষের।


বৃষ্টি কমায় পানি নামতে শুরু করেছে নোয়াখালী থেকে। তবে এখনও জলমগ্ন সেনবাগ, সোনাইমুড়ি ও বেগমগঞ্জের নিচু এলাকা।


বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই গত ক’দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে আবারও নিমজ্জিত হয় নোয়াখালীর নিম্নাঞ্চল। এতে ৫ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে অন্তত ১২ লাখ মানুষ।


নতুন করে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ৪০ হাজার বানভাসি। একই পরিস্থিতি লক্ষ্মীপুরেও। গতকাল রাত থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় উন্নতি হচ্ছে প্লাবন পরিস্থিতির।


নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটের উপকূল জুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় ভারীবৃষ্টিপাতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলবদ্ধতায় বিপযস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।


এদিকে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ার বেশকিছু এলাকায় মৎস্যঘের ডুবে মাছ বের হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি আরো দু-একদিন স্থায়ী হলে এসব এলাকার বেশিরভাগ ঘের ডুবে যাবে বলে দাবি মাছ চাষীদের।বাগেরহাট মিঠাপুকুরের কচুরিপানা ভেসে আসছে পাকা সড়কে ও বাসাবাড়িতে।


বাগেরহাট শহরের রিকশা চালক রবিউল ইসলাম বলেন, দুই দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার পরেও,বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। রাস্তাঘাট গুলো গর্ত হয়ে গেছে ,পানিতে পাকা সড়কে গর্ত দেখা যায় না। তারপরও খেটের তাগিতে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। লোকজন নেই, তারপরও দুই চারজন যা পাঁচ্ছি এই দিয়েই সংসার চালাতে হবে।


বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল বিরুনী বলেন, পশুর নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে যাদি বৃষ্টি অব্যাহত থাক তাহলে নদীর পানি আরও বৃদ্বির সম্ভবনা রয়েছে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com