
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে এখন পর্যন্ত ১২ থেকে ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে পুনর্বাসিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মানবিক কারণে তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে পুর্নবাসন করা হলেও তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন করা রোহিঙ্গা সঙ্কটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক শরণার্থীবিষয়ক সমন্বয়কারী ম্যাকেঞ্জি রো।
১২ জুন, বুধবার ঢাকায় দেশটির দূতাবাসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। আগামী ২০ জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাস ওই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান যে যুক্তরাষ্ট্র কতজন রোহিঙ্গা সদস্যকে তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে সঠিক কোনো সংখ্যা জানাতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক শরণার্থীবিষয়ক সমন্বয়কারী ম্যাকেঞ্জি রো।
তিনি বলেন, আঞ্চলিকভাবে এ পর্যন্ত ১২ থেকে ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করা হয়েছে। সামনের দিনে আরো রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসিত করার সম্ভাবণা রয়েছে। তবে তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন রোহিঙ্গা সঙ্কটের দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান নয়।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক শরণার্থীবিষয়ক সমন্বয়কারী বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিপদে পরে সাময়িক আশ্রয় নিতে এখানে এসেছে। এখানে তাদেরকে আমাদের সহায়তা করা প্রয়োজন। যা নিশ্চিত করতে আমরা অন্য অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে কাজ করছি। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে মানবিক কার্যক্রম বাধা পায় এমন কর্মকাণ্ডের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ রয়েছে। তাই আমাদের সহায়তা যাঁদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তাঁরা যেন পান, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা নিয়েও কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ম্যাকেঞ্জি রো। জবাবদিহি নিশ্চিত করাটা আইনের শাসন দ্বারা চিহ্নিত একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের অপরিহার্য ভিত্তি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ম্যাকেঞ্জি রো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে বেসামরিক নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার সবচেয়ে বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও জাতিগত নিধনের ফলে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। বিগত ২০১৭ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সঙ্কটে মানবিক সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ২৪০ কোটি ডলার দিয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ১৯০ কোটি ডলার।
উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালের আগস্টে জীবন বাচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্য বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে সাময়িক আশ্রয় নেয়।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]