যমুনা ফার্টিলাইজার থেকে ৮৬ কোটি টাকার বকেয়া কর আদায়
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৪, ১৪:৫৯
যমুনা ফার্টিলাইজার থেকে ৮৬ কোটি টাকার বকেয়া কর আদায়
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের ১০টি এফডিআর ভেঙে প্রায় ৮৬ কোটি টাকার বকেয়া কর আদায় করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কর অঞ্চল ১৫ ওই বকেয়া কর আদায় করেছে বলে একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।


৭ জুন, শুক্রবার এ বিষয়ে কর অঞ্চল-১৫, ঢাকার কর কমিশনার আহসান হাবিব গণমাধ্যমকে বলেন, যমুনা ফার্টিলাইজার লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর প্রায় ১৫৩০ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। অথচ বকেয়া কর পরিশোধ করে না। আমি তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। তাদের কিছু দাবি ছিল, সে অনুযায়ী যাচাই করা হয়েছে। এতে কর কমেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কর পরিশোধে অঙ্গীকার করেছেন। কিন্তু পরে টাকা পরিশোধে গড়িমসি করে।


তিনি বলেন, আমি তাদের বলেছি ট্যাক্স না দিলে কর জিডিপি বাড়বে কি করে। গড়িমসি করায় পরিশেষে ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। আমাদের কর্মকর্তারা দুইটি ব্যাংকের ছয়টি শাখা থেকে যমুনা ফার্টিলাইজারের ১০টি এফডিআর ভেঙে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা আদায় করেছে।


এনবিআর সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড। জামালপুরে অবস্থিত এই সার কারখানার আয়কর ফাইল কর অঞ্চল-১৫, ঢাকার সার্কেল-৩১০ (কোম্পানি) রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ২০১৩-১৪ করবর্ষ থেকে ২০২১-২২ করবর্ষ পর্যন্ত বকেয়া করের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৪ কোটি টাকা। কর অফিসের বকেয়া দাবি ছিল প্রায় ১১৪ কোটি টাকা। বাড়তি কর দাবি করা হয়েছে এমন অজুহাত দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর কর পরিশোধ করেনি। শেষে বকেয়া কর আদায়ে কর অঞ্চল-১৫, ঢাকার বর্তমান কর কমিশনার আহসান হাবিব সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও আইনজীবীর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুযায়ী কর ফাইল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হয়। এতে বকেয়া করের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৬ কোটি ৪১ হাজার ৯০৫ টাকা। কিন্তু বকেয়া কর পরিশোধে গড়িমসি শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। অবশেষে গত ৫ জুন (বুধবার) প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে দেশের সব ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এফডিআর ভেঙে বকেয়া করের টাকা পরিশোধ করতে ব্যাংকে অনুরোধ করা হয়।


ওই দিনই সার্কেল-৩১০ এর উপকর কমিশনার মো. নেফাউল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বে ছয়জন কর পরিদর্শকের একটি টিম বেসিক ব্যাংক লিমিটেড ও যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের ছয়টি শাখায় বকেয়া কর আদায়ে যান, যেখানে যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের দুইটি ব্যাংক হিসাব ও এফডিআর রয়েছে। অবশেষে ৫ জুন বুধবার ও ৬ জুন বৃহস্পতিবার দুইদিন পরিশ্রম শেষে এই টিম বেসিক ব্যাংকের চারটি শাখা (গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট ও কাকরাইল) ও জনতা ব্যাংক লিমিটেডের দুইটি শাখা (মতিঝিল কর্পোরেট শাখা ও বংশাল) হতে যমুনা ফার্টিলাইজারের ১০টি এফডিআর ভেঙে বকেয়া কর হিসেবে ৮৬ কোটি ৪১ হাজার ৯০৫ টাকার পে-অর্ডার নিয়ে আসে।


এর আগে কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান-১ শাখায় অভিযান পরিচালনা করেছে কর অঞ্চল ১৫, ঢাকার কর্মকর্তারা। গত ৩০ এপ্রিল দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। তবে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় প্রথমে ওই টাকা আদায় সম্ভব হয়নি। শেষে উচ্চ আদালতে প্রতিষ্ঠান হেরে গেলে বকেয়া করের সেই টাকা দিতে বাধ্য হয় ব্র্যাক ব্যাংক।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com