সুন্নতে খতনা
শিশু আয়হামের মৃত্যুর ঘটনায় জেএস ডায়াগনস্টিক সিলগালা
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:০২
শিশু আয়হামের মৃত্যুর ঘটনায় জেএস ডায়াগনস্টিক সিলগালা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর মালিবাগ রেলগেটের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে সুন্নতে খতনা করতে গিয়ে শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হামের মৃত্যুতে শুরু হয় তোলপাড়। এ ঘটনায় দুপুরে প্রতিষ্ঠানটিতে আসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্তদল। পরিদর্শনের পর তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেয়।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি হাসপাতাল নয়, ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যে কারণে তাদের অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগের কোনো সুযোগ নেই। তারা অননুমোদিতভাবে হাসপাতাল পরিচালনা করছিল।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন।


এর আগে, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় শিশুটির বাবা ফখরুল আলম বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে আটজনকে আসামি করা হয়। মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই চিকিৎসককে। তারা হলেন- হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির ও ডা. মাহবুব।


স্বজনরা জানিয়েছেন, শিশু আয়হাম তাহমিদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর ১০ বছর বয়সী ছেলে আয়হাম তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করাতে নিয়ে যান বাবা ফখরুল আলম।


পরিবারের অভিযোগ, আসার পরই হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরদের নেতৃত্বে তাহমিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. মাহাবুব ও ডা. ইশতিয়াক আজাদ।


এর ঠিক ২০ মিনিট পর আহনাফকে দেখতে চান পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হট্টগোল। এরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করে তারা।


পরিবার বলছে, প্রথমে লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া প্রয়োগ করার কথা থাকলেও দেয়া হয় জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়া। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলেও বমি করে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় আয়হাম।


স্বজনরা বলছেন, আয়হাম হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছে। এরপর সাড়ে ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। ৯টার পর সে মারা যায়।
এমন ঘটনার পরও দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হয়নি জানিয়ে তাদের দাবি, আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল আয়হামের। সে ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য না দেয়াতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির দাবি করেন, ছেলেটির ওজন বেশি ছিল। বয়সও ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। ফুসফুসে সমস্যা ছিল। কিন্তু সব তথ্য পরিবার জানায়নি।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি আয়ান নামে এক শিশুর সুন্নতে খতনা করতে গিয়ে মৃত্যু হয়। ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য আয়ানকে বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আয়ানের বাবা-মায়ের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে সুন্নতে খতনার সময় অতিরিক্ত অ্যানেস্থেশিয়া দেয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com