মিয়ানমারের আর কোন নাগরিক ঢুকতে দেব না: বিজিবি মহাপরিচালক
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:২১
মিয়ানমারের আর কোন নাগরিক ঢুকতে দেব না: বিজিবি মহাপরিচালক
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় সীমান্তে বিজিবির টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে। তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে বিজিবি সীমান্তের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, পরিস্থিতি যাই হোক সীমান্ত দিয়ে আর একজন মিয়ানমার নাগরিককেও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।


বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ (বিজিপি) ৩৩০ জনকে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের কাছে হস্তান্তর শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিজিবি প্রধান।


তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধৈর্য ধারণ করে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রেখে বিজিবিকে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে বিজিবির তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী সদস্যদের সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণ করে এবং তাদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় আগত ৯ বিজিপি সদস্যকে বিজিবির তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।


বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিজিপিসহ ৩৩০ জন সদস্যকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিজিবির রামু সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবীরের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রত্যাবাসন কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ ও সমন্বয় করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপিসহ অন্যান্য সদস্যদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এখন শুধু মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে নিয়ে অস্ত্রগুলো পৃথক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হবে।


এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জাহাজে করে মিয়ানমারের ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিজিপি প্রতিনিধিদল কক্সবাজারের ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিঘাটে আসে এবং বিজিবির কাছ থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন নাগরিককে গ্রহণ করেছে মিয়ানমার। ইতোমধ্যে ১৬৫ জনকে জাহাজে তোলা হয়েছে। বিকেলের মধ্যে সব শেষ হবে।


বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় সীমান্তে বিজিবির টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে। তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে বিজিবি সীমান্তের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি যাই হোক সীমান্ত দিয়ে আর একজন মিয়ানমার নাগরিককেও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।


এর আগে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে স্পিডবোটযোগে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুলিশ কর্নেল মিউ থুরা নাঙয়ের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিজিপি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের ইনানী নৌ-বাহিনী জেটিঘাটে এসে পৌঁছেছে।


গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুমধুম ও বাইশফাঁড়ী সীমান্তের বিপরীতে বিজিপির তুমব্রু রাইট ও লেফট ক্যাম্পে আক্রমণ করে। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী, পালংখালী এবং টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও শাহপরীরদ্বীপ সীমান্তের বিপরীতে ওপারে কাইচিং রং, মইদু, গদুদ্ধজ্য ও মংডু এলাকায়ও গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনা, পুলিশ, ইমিগ্রেশন ও বেসামরিক সদস্যরা প্রাণভয়ে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে অস্ত্রসহ বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com