বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও রাজবাড়ীর তিনজন নিখোঁজ
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:১২
বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও রাজবাড়ীর তিনজন নিখোঁজ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর গোপীবাগে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। আগুনে ট্রেনটির ইঞ্জিন রুম ও ৫টি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এসময় দগ্ধ চার যাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।


ট্রেনটি শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে যশোরের বেনাপোল স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। রাত ৯টার দিকে ট্রেনটিতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট। প্রায় সোয়া ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।


এদিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও নি‌খোঁজ র‌য়ে‌ছেন রাজবাড়ীর তিনজন। তা‌দের বাড়িতে চল‌ছে মাতম।


নিখোঁজরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার সাজ্জাদ হোসেনে স্ত্রীর এলিনা ইয়াস‌মিন (৪০), একই উপজেলার বেলগাছি আলিমুজ্জামান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক প্রয়াত চিত্ত রঞ্জনের মেয়ে চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমি (২৮) এবং কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের গাংবথন্দিয়া গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে আবু তালহা (২৪)। তালহা সৈয়দপুরের বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি পরিবার নিয়ে ফরিদপুর শহরে থাকেন।


জানা গে‌ছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ী রেলও‌য়ে স্টেশন থে‌কে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেনা‌পোল এক্স‌প্রেস ট্রেনে ওঠেন এলিনা, সৌমি ও আবু তালহাসহ ৬৫ জন যাত্রী। বাবার কুলখা‌নি শে‌ষে ৬ মা‌সের শিশু সন্তান, বোন ডেইজি আক্তার রত্না, বোন জামাই ইকবাল বাহার ও তা‌দের দুই সন্তানসহ বেনা‌পোল এক্স‌প্রেস ট্রেনে ‘চ’ ব‌গি‌তে ঢাকায় যা‌চ্ছিলেন এলিনা। অন্যদিকে সৌমি ঢাকায় তার ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। আবু তালহাও যাচ্ছিলেন ঢাকায়।


তবে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছা‌নোর আগে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ভয়ানক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের ‘চ’ বগিসহ মোট চারটি বগি পুড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলেই মারা যান ৪ যাত্রী। আর এরপর থেকেই নিখোঁজ এলিনা, সৌমি ও আবু তালহা।


চন্দ্রিমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনে আগুন লাগার আধাঘণ্টা আগেও চন্দ্রিমার সঙ্গে কথা হয় তার পরিবারের। তবে ট্রেনে আগুন লাগার পর থেকে তার খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।


চন্দ্রিমার চাচা অতনু বলেন, চন্দ্রিমার পড়ালেখা শেষ। তিনি ঢাকায় তার ভাইয়ের বাসায় থেকে চাকরির চেষ্টা করছিলেন। শুক্রবার তিনি রাজবাড়ী স্টেশন থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশ্য যান। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তার কোনো সন্ধান পাচ্ছি না আমরা।


আবু তালহার বাবা আব্দুল হক বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর কালুখালীতে হলেও আমরা এখন ফরিদপুরে থাকি। আবু তালহা শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর স্টেশন থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশ্য যান। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাইনি।


জানা গেছে, এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলিনার সঙ্গে থাকা বোন, বোনের স্বামীসহ সবাই দগ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে সবাই ঢাকা মে‌ডি‌কে‌লে চি‌কিৎসাধীন র‌য়ে‌ছেন। তবে এ ঘটনার পর থেকে এলিনা ইয়াসমিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে এ ঘটনার পর সৌমি ও আবু তালহার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না তাদের পরিবার। তাদের খোঁজ পেতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহ‌যো‌গিতা কামনা ক‌রে‌ন পরিবারের সদস্যরা।


রাজবাড়ী রেলস্টেশনের মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বলেন, বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজবাড়ী জেলার জন্য আসন বরাদ্দ থাকে মোট ৫৫টি। কিন্তু শুক্রবার রাজবাড়ী থেকে আনুমানিক ৬৫ জন যাত্রী বেনাপোল এক্সপ্রেসে ঢাকার উদ্দেশ্যে যান।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com