যাত্রী চাপে মেট্রোরেলের দরজা লাগানোই মুশকিল!
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:২০
যাত্রী চাপে মেট্রোরেলের দরজা লাগানোই মুশকিল!
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মতিঝিল গন্তব্যে মেট্রোরেলের আজ তৃতীয় দিন। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মাত্র ৩২ মিনিটেই পৌঁছানো যায় বলে এই পথের যাত্রীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন হয়ে উঠেছে মেট্রোরেল। যদিও শুরুতে মাত্র চার ঘণ্টার জন্য মেট্রোরেল চালানো হচ্ছে এই পথে। তবুও যাত্রীর কমতি নেই মতিঝিল গন্তব্যে। ‘দরজা ঠাসা’ যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল ছুটছে বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের পথে।


মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন থেকে আফজাল হোসেন আজমের তোলা দুটি ছবিতে দেখা গেছে, ওই সময় মতিঝিল গন্তব্যের মেট্রো ট্রেনের প্রতিটি কোচে নির্ধারিত সংখ্যার বেশি যাত্রী চড়েছে। যাত্রী চড়তে চড়তে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মেট্রো ট্রেনের কোচের দরজা যেন ঠিকমতো লাগে, সেজন্য যাত্রীরা নিজেদের ভেতরের দিকে চাপ দিয়ে রেখেছেন। এমন দৃশ্য বাংলাদেশের মেট্রোরেলে প্রথমবারের মতোই দেখা গেছে। আফজাল হোসেন ছবি দুটি জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ ‘ট্রাফিক অ্যালার্টে’ পোস্ট করেছেন।


ছবিগুলো দেখে মন্তব্যের ঘরে অনেকেই লিখেছেন, এখন বোধহয় বিদেশের মতো পুশ ম্যান প্রয়োজন হবে মেট্রোরেলে যাত্রী চড়াতে। আবার অনেকেই লিখেছেন অফিস টাইমে ১০ মিনিট নয়, অন্তত ৩ মিনিট পরপর স্টেশনে মেট্রো ট্রেন আসা উচিত। যাত্রীর চাহিদা যেহেতু রয়েছে সেহেতু কর্তৃপক্ষ আরও মেট্রোরেল পরিচালনা করতে পারে। আবার অনেকে মন্তব্য করেছেন, মেট্রোর ভালো দিন বোধহয় শেষ হয়ে গেল।


এর আগে মতিঝিল স্টেশনে দাঁড়িয়ে জনতা ব্যাংকের কর্মী মনোয়ার হোসেন বলেন, মাত্র ২০ মিনিটে মিরপুর-১০ নাম্বার থেকে মতিঝিল আসলাম। আগে আমাকে সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম থেকে উঠতে হতো। এরপরেও এখানে পৌঁছাতে প্রায় দশটা বেজে যেত। এখন গতকাল থেকে সকালে নিজের জন্য কিছু সময় পেয়েছি। কিছুটা সময় পরিবারকেও দিতে পারি।


স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তা সোনিয়া খন্দকার জুই বলেন, আমার বাসা কল্যাণপুরে। সেখান থেকে এই মতিঝিল আসতে আমাকে অন্তত পৌনে আটটায় বাসে উঠতে হতো। এই মতিঝিল পৌঁছাতে কখনো দশটা বা সোয়া ১০টা বেজে যেত। আমি আজকে নয়টার সময় বাসা থেকে বের হয়েছি বং আপনার সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছি সকাল সাড়ে নয়টায়। আমার কল্যাণপুরের বাসা থেকে বের হয়ে এই মতিঝিল পর্যন্ত আসতে মাত্র ৩০ মিনিট সময় লেগেছে।


তিনি আরও বলেন, আমাদের সময় বাঁচানোর জন্য এবং যুগোপযোগী একটি পরিবহন ব্যবস্থা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অসংখ্য কৃতজ্ঞতা।


মেহেদি হাসান সিদ্দিকী বলেন, বিকেল পাঁচটার পর ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১২ নম্বারের একটা বাসে ওঠা রীতিমতো একটা এভারেস্ট জয়ের সমান। এই সময়টায় প্রতিযোগিতা করে বাসে উঠতে হয় আর জ্যাম তো আছেই। আপনি যদি এই প্রতিযোগিতা করে বাসে উঠতে না পারেন তাহলে আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। না হলে সিএনজি কিংবা হেঁটে রওনা দিতে হবে। মহিলা হলে কোন কোন বাসের কন্ডাকটার নেয়-ই না, আবার স্কুলের ছেলেমেয়েদের ড্রেস পড়া দেখলেও অনেক বাস থামায় না।


আগে কেউ ভাবছিলো উত্তরা থেকে মাত্র ৩২ মিনিটে মতিঝিল আসা যাবে। মেট্রোরেল একটা আরামদায়ক জার্নির নাম, যোগ করেন মেহেদি হাসান।


অন্যদিকে যাত্রীর চাপের কারণে ট্রেনে চড়তে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ফজলে রাব্বী নামে আরেক যাত্রী। পাশাপাশি তিনি পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন, মেট্রোরেল আসাতে জাতির জন্য অনেক স্বস্তি হয়েছে, কিন্তু দুঃখের বিষয় মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়ার মানুষ ঠিকভাবে উঠতে পারছে না ট্রেনে। এতে করে তাদের কষ্ট রয়েই গেল। তাই এমন সুবিধা করা উচিত কিছু ট্রেন শুধুমাত্র মিরপুর ১০ নম্বরে থামবে, কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া থামবে। যেমন আমরা কর্পোরেট লিফট দেখি জোড় আর বিজোড়। আমি আমার অ্যানালাইসিস ব্যক্ত করলাম, ভুল হতে পারে আমার, ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন যদি ভুল কিছু বলে থাকি।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com