অজ্ঞাতনামা বা ছদ্মনামীয় কাজের স্বত্বাধিকারীর সংজ্ঞা নির্ধারণ করে জাতীয় সংসদে ‘কপিরাইট বিল, ২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কপিরাইটের মেয়াদ হবে ৬০ বছর।
২০০০ সালের কপিরাইট আইন রহিত করে নতুন এই আইনটি করা হচ্ছে। সোমবার সংসদে বিলটি পাসের জন্য তোলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিলের ওপর আনা বাছাই কমিটিতে প্রেরণ, জনমত যাচাই ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, মৌলবাদের অর্থনীতি শক্তিশালী। কিন্তু উদারতন্ত্রের অর্থনীতি বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে না। ১৫ বছর এ সরকার ক্ষমতায় আছে কিন্তু সাংস্কৃতিক বিপ্লব দেখা যায়নি। ঢাকা শহরের একটা অংশ কালচারাল হেরিটেজ হওয়ার কথা ছিল, কালচারাল ক্যাপিটাল হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। উপজেলা পর্যায়ে সংস্কৃতির জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। কালচারাল বিপ্লবের জন্য বরাদ্দ নেই। এর দায়ভার একসময় এ সরকারকে নিতে হবে।
বাংলাদেশে গণহারে পাইরেসি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি ফটোকপির দোকানে দেখা যায় কারও না কারও বই অনুমতি ছাড়া কপি হচ্ছে। এর সুবিধা হচ্ছে ছাত্ররা কম টাকায় বই পায়। তবে আন্তর্জাতিক দায় রয়ে গেছে। একটা সময় বাংলাদেশকে এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হবে, যে এই পাইরেসির বিষয়ে সরকার কী করেছে।
সিনেমা হারিয়ে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা আসছে না এমন মন্তব্য করে শামীম হায়দার বলেন, এক্ষেত্রে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেখানে মানসম্পন্ন সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, নাটক হচ্ছে। কিছু সমালোচনা আছে, অশ্লীলতা আছে, নিয়ন্ত্রণের কিছু প্রয়োজন আছে। কিন্তু সাবলীলভাবে তারা একের পর এক সিরিজ করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় ও আইসিটি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বিভিন্ন সংস্থা করছে। এগুলো কারার মাধ্যমে সৃজনশীলতা লোপ পেতে পারে। সিনেমা বানানোর সময় যদি মাথায় থাকে সেন্সর বোর্ডে আটকে যাবে, তখন সৃজনশীলতা থাকে না।
বিলে প্রকাশনা, চলচ্চিত্র, ডিজিটাল কাজ, নাটক, লোককাহিনী, শিল্পকলা এবং অডিও রেকর্ডিংয়ের মৌলিক কাজের অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে। বিলে অজ্ঞাতনামা বা ছদ্মনামীয় কর্মের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘একক বা যৌথভাবে রচিত ও ছদ্মনামে প্রকাশিত কোনো কর্মের ক্ষেত্রে প্রণেতার পরিচয় প্রকাশ হওয়ার আগপর্যন্ত প্রকাশক কর্তৃক জনসাধারণ্যে প্রকাশিত প্রণেতা অথবা তাঁর আইনানুগ প্রতিনিধি।’ এছাড়া বিলে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ডিজিটাল কর্মের সংজ্ঞাও নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণসংবলিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে যে মেধাসম্পদ তৈরি হয়, তার আইনগত স্বীকৃতি ও সুরক্ষার জন্য কপিরাইট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গত দুই দশকে প্রযুক্তির অসামান্য উন্নতির প্রেক্ষাপটে মেধাস্বত্বের ব্যবহার ও প্রযুক্তিনির্ভরতা বহুগুণ বেড়েছে এবং পাইরেসি বৃদ্ধির কারণে মেধাসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষায় বিদ্যমান কপিরাইটের অধিকতর সংশোধন করা প্রয়োজন হওয়ায় বিলটি আনা হয়েছে।
বিবার্তা/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]