আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি নেতারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেছেন : হানিফ
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১৮:৪৮
আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি নেতারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেছেন : হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।


তিনি বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে আজকে তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন। হতাশা তো সবে শুরু হয়েছে। আন্দোলনের নামে কর্মীদেরকে ক্ষমতার মূলা দেখিয়ে উজ্জীবিত করে যখন আন্দোলন ব্যর্থ হয় তখন হতাশায় ডুবে যায়। এখন সেই বিএনপি সেই হতাশাগ্রস্তের মধ্যে চলে গেছে।


শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৪টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।


মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুল আন্দোলনে তরুণ, যুব সমাজের কোনো ভূমিকা না দেখে হতাশ হয়েছেন। হতাশা তো মাত্র শুরু হয়েছে। তিনি (ফখরুল) বলেছেন এমনি করে এই সরকারের পতন ঘটানো যাবে না, সুনামি লাগবে। ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে নেতা-কর্মীদের উজ্জ্বীবিত করে ভেবেছিলেন সরকারের পতন ঘটাবেন। এই সরকার আওয়ামী লীগ সরকার, শেখ হাসিনার সরকার। আমরা আগেও বলেছি আওয়ামী লীগের শেকড় এই বাংলার অনেক গভীরে, ধাক্কা দিয়ে ক্ষমতা থেকে ফেলা যাবে না।


তরুণ সমাজ বিএনপির আন্দোলনে কেন যাবে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনারা বলছেন টেক ব্যাক বাংলাদেশ। কিন্তু তরুণ সমাজ তো এগিয়ে যেতে চায়। তারা ফরওয়ার্ড বাংলাদেশ দেখতে চায়। তরুণ সমাজ উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চায়। তারা কেন ব্যাকে যাবে! 'টেক ব্যাকে'-এ দেশের মানুষের সমর্থন নেই। আর সেই কারণে বিএনপির প্রতি মানুষের সমর্থন নেই।


বিএনপি সৃষ্টির পর থেকে হত্যা, গুম, খুনের রাজনীতি করেছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে ক্যান্টনমেন্টে বসে সামরিক গর্ভে, যার জন্ম হয়েছে হত্যা, খুনের মধ্য দিয়ে। তাদের জন্ম হয়েছে একাত্তরে গণহত্যাকারী পাকিস্তানের মদদে। যারা বাংলাদেশকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছে সেই সন্ত্রাস, নাশকতা দল বিএনপি-জামায়াত আবার সক্রিয় হয়েছে।


এই বিএনপি শুধু বাংলাদেশ নয়; বহির্বিশ্বে সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কানাডার আদালত পাঁচ বার রায় দিয়েছে বিএনপি সন্ত্রাসী দল। কয়েকদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্ট রায় দিয়ে পরিষ্কারভাবে বলেছে, বাংলাদেশে বিএনপি তৃতীয় মাত্রার সন্ত্রাসী দল।


কোনো নৈরাজ্যকারীকে আর ছাড় দেয়া হবে না এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে হানিফ বলেন, তারা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে এই দেশেকে অস্থিতিশীল করতে চায়। নৈরাজ্য ধ্বংসাত্বক কার্যকলাপ করতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে আর কোনো নৈরাজ্যকারীকে ছাড় দিতে রাজী নয়। অতীতে যেভাবে এই নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা হয়েছে, আগামীদিনেও ঠিক একইভাবে প্রতিহত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো, এটা আমাদের সকলের দৃঢ় প্রত্যয়।


বিএনপি নেতাদের সমালোচন করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল পরশুদিন বলেছে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করছে। মির্জা ফখরুল একজন শিক্ষক মানুষ। একজন শিক্ষক কিভাবে এতো নির্লজ্জ মিথ্যাচার করতে পারে, মির্জা ফখরুলকে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। পদ্মা সেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল, পায়রা সমুদ্র বন্দর হয়েছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ দেশে মেগা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। চতুর্দিকে এসব উন্নয়ন কি জনগণের বিরুদ্ধে?


তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য ছিল লুটপাট করা, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। এই দেশকে তারা পিছিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। যার কারণে বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। যার কারণে শেখ হাসিনা দেশের ৭০-৮০ ভাগ মানুষের জনসমর্থন পেয়েছেন।


আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে অতীতে বিএনপি-জামায়াত অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগে সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। এই অগ্রযাত্রা যাতে বিনষ্ট না হয় সেজন্য আমাদের শান্তি সমাবেশ।


হানিফ বলেন, আন্দোলন আন্দোলন খেলা অনেক হয়েছে এবার ঘরে ফিরে যান। আন্দোলন করে সরকারের পতন হবে না। আপনারা বলেছেন সেপ্টেম্বরে আন্দোলন করবেন এটা মনে রাখবেন আন্দোলনের নামে কোনো নাশকতার পরিকল্পনা থাকলে এখনি বাদ দিয়ে দেন। আর না হলে অতীতে যেভাবে আপনাদের কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে, আগামীতেও প্রতিহত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।


শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।


সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম প্রমুখ।


ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।


বিবার্তা/সোহেল/এসবি/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com