বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি একটা মিথ্যা দাবি: শেখ পরশ
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৩, ২১:৩১
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি একটা মিথ্যা দাবি: শেখ পরশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনের (শ্যামপুর-কদমতলী থানা) ৭টি ওয়ার্ডের ইউনিটসমূহের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।


১৭ জুন, শনিবার, দুপুর আড়াইটায় রোড-৮, শ্যামপুর শিল্প এলাকা (গাজী ট্যাংক ফ্যাক্টরীর সামনে), কদমতলীতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।


প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম এমপি।


সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।


প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।


বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী।


সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমেদ ও সঞ্চালনা করেন-ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।


উদ্বোধকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আত্মশুদ্ধি যুবশক্তির উন্মোচন চাই। নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা সুদৃঢ় করতে হবে। সাফল্যের শর্টকাট খুঁজলে হবে না। যোগ্যতা ও কঠোর পরিশ্রম দ্বারা সাফল্য খুঁজতে হবে। আমাদের নেত্রী যার জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি সাফল্যের শর্টকাট খুঁজেন নাই। কোনো বহি শক্তির রক্তচক্ষু শেখের বেটি ভয় পায় না।


তিনি আরও বলেন, কোনো বহি শক্তির আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনধিকার চর্চা করা উচিত হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে তারা চাপ প্রয়োগ করলে সেটা হবে রাজনৈতিক ও কুটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।


তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোট ও ভাতের জন্য শেখ হাসিনা সারাজীবন সংগ্রাম করেছে। বিএনপি সুষ্ঠু ভোট ব্যবস্থাকে ভয় পায়। কারণ তাদের নেতৃত্ব নেই। নিজেদের মধ্যে আস্থার অভাব। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অর্থহীন দাবি। তারা নিজেরাই জানে এটা অবাস্তব দাবি, কিন্তু তবুও তারা তাদের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করছে।


তিনি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে রাজনীতি করতে হবে। দেশের মানুষের জন্য ত্যাগ শিকার করা ও মানুষের সেবা করার তাৎপর্য বুকে ধারণ করে রাজনীতি করবে আওয়ামী যুবলীগ।


তিনি আরও বলেন, ১৯৭৪ সালের আওয়ামী যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আত্মসুদ্ধ যুবশক্তির উন্মেষ চাই।’ যুব সমাজের উপর জাতির পিতার ছিল অগাধ বিশ্বাস। আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে অতন্দ্র প্রহরীর মত ভূমিকা রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে দেশপ্রেম ভিত্তিক রাজনীতি ও শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণ। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন হচ্ছে, অর্থনৈতিক মুক্তি তথা, আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাশীল একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।


তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছেন। যুগান্তকারী উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছেন, যেটা বিশ্বের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দক্ষ ‘যুবশক্তি’ হয়ে যুবলীগ ভূমিকা রাখবে। তাই দক্ষতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করতে সকল যুবলীগের ভাই-বোনদের তাগিদ দিচ্ছি। সম্প্রতি আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার সরকার অপরিসীম দক্ষতার সাথে করোনা মোকাবিলা করেছে। পৃথিবীর খুব কম সংখ্যক সরকার এই রকম দক্ষতার সাথে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার কৃতিত্বে ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে আমরা প্রায় ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রয়েছি।


তিনি আরও বলেন, পরিতাপের বিষয় ১৫ বছর কিছু তথাকথিত নেতৃবৃন্দ ব্যক্তি স্বার্থে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা দিয়ে আমাদের পরীক্ষিত, দুরসময়ের নেতা-কর্মীদের বঞ্চিত করছে। এটা সংগঠনের জন্য অপরিসীম ক্ষতিকর। এর মাধ্যমে বিএনপি-জামাত শিবিরের সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীরা পুনর্বাসিত হচ্ছে ও দলের ভিতরে ঢুকে আমাদের চরম ক্ষতিসাধন করছে। আমি মনে করি এটা স্বাধীনতা বিরোধী চক্র, জামাত শিবির ও বিএনপির সুপরিকল্পিত নীলনকশা আমাদের সংগঠনকে দুর্বল করে আমাদের মধ্যে ফাটল ধরানোর জন্য।


তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকে একটা মহল, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এ দেশের শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ঠিক যেসময় আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০০ ডলারেও বেশি; ঠিক যখন এ দেশের মেহনতি মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত হয়েছে, ঠিক তখন ঐ দেশবিরোধী চক্র সাধারণ মানুষের উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করতে উদ্যত হয়েছে। এই বঞ্চনার রাজনীতি প্রতিহত করবে যুবলীগ।যুবলীগ মাঠে-ঘাটে-রাজপথে ওদেরকে মোকাবিলা করতে জানে, আগেও করেছে। আন্দোলন-সংগ্রাম করে আপনারা আমাদের কি উৎখাত করবেন? এ দেশের গণতন্ত্র আমাদের সংগ্রামের ফসল, ভোট ও ভাতের অধিকারও আমাদের আন্দোলনের ফসল। সুতরাং ওই ভয় আমাদেরকে দেখিয়ে লাভ নাই।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম এমপি বলেন-আজকে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। একাত্তরে যেমন সমস্ত পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, এখন সময় এসেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। কারও অনুগ্রহে আমরা স্বাধীন হই নাই।


তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্র চলছে দেশের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করা যাবে না, তাই তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে বিএনপি আবার দেশে অনির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বিএনপি চায় না নির্বাচন হোক।


তিনি আরও বলেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। শেখ হাসিনার নির্বাচনকালীন সরকারের নেতৃত্বে নির্বাচন হবে যেখানে নির্বাচন কমিশনের উপর সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে তাদেরই কবর রচনা হবে। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন বন্ধ হবে না। সংবিধান অনুযায়ী সঠিক সময়ে নির্বাচন হবে। জাতীয় নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনার পক্ষেই রায় দেবে।


সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন-মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি তরুণ সমাজ, যুব সমাজ। তরুণ সমাজ শক্তিশালী হলে শেখ হাসিনা শক্তিশালী হবে, বাংলাদেশ শক্তিশালী হবে। বিএনপি জামাত তরুণদের নিয়ে সমাবেশের নামে কি করছে? চট্টগ্রামের তরুণদের নিয়ে সমাবেশের নামে জাতির পিতার প্রকৃতি ভেঙে দিয়েছে এটা অসচেতনতা নয়।


সিরাজগঞ্জে মির্জা ফখরুল ইসলামের সমাবেশে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, আমাদের সংগ্রাম আমাদের লক্ষ্যই হলো শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। তাদের লক্ষ্যই একটা শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। মির্জা ফখরুলরা বিদেশিদের তাঁবেদারি করছে। শেখ হাসিনাকে হত্যা করে তারা ৭৫ এ যেমন করেছিলো তেমন একই কায়দায় আবার বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করতে চায়।


বিএনপির খুনের রাজনীতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে, দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। এর থেকে বাঁচার মূল চাবিকাঠি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। জাতির পিতার আদর্শের সন্তানরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি প্রতিহত করতে পারব। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমরা ওই খুনের রাজনীতিকে পরাজিত করতে পারব।


সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, যে ষড়যন্ত্র শেখ হাসিনাকে উৎখাতের, সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলার সামর্থ্য আছে যুবলীগের। তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিদেশি শক্তিরা মানবাধিকারের দোহাই দিচ্ছে। আমরা তাদের বলতে চাই বিএনপির শাসনামলে কি হয়েছে তা দেখেন।


তিনি বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন সেই অগ্রযাত্রাকে রুখতে বিএনপি জামাত মাঠে নেমেছে। যুব সমাজ ছাত্র সমাজকে ধ্বংস করে জিয়াউর রহমান। তাদেরকে নৌবিহারে নিয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছে জিয়াউর রহমানের সন্তান। তারুণ্যের সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী, ইয়াবা সেবনকারীদের নিয়ে ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হয়েছে বিএনপি।


এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের অর্থ সম্পাদক ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ সায়মন, সহ-সম্পাদক আইয়ুব আলী, সদস্য গোলাম মোস্তফা।


এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, সহ-সম্পাদক আবির মাহমুদ ইমরান, কার্যনির্বাহী সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, মো. আসাদুজ্জামান সুমন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি আনোয়ার ইকবাল সান্টু, হারুন অর রশিদ, নাজমুল হোসেন টুটুল, মুরসালিন আহমেদ, যুগ্ম-সম্পাদক জাফর আহমেদ রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মাকসুদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আরমান হক বাবু, দপ্তর সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ-উজ-জামান, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহজালাল রিপন, সদস্য এ আর বাচ্চুসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com