পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমাদের মিডিয়াগুলো বিদেশিদের কথায় হৈ-চৈ করে। মিডিয়ার কারণেই বিদেশিরা নিজেদের এ দেশের রাজা মনে করে। আমাদের মিডিয়া যদি ওদের কাভার করা বন্ধ করে দেয়, তাহলে ওরা ঘরে বসে খালি ‘হুক্কা’ খাবে।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট সিভিল সার্জনের কার্যালয় আয়োজিত ইপিআই ভবনে কমিউনিটি ক্লিনিকবিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও ভিশনের কারণে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। প্রতিবেশি রাষ্ট্রের চেয়ে আমাদের অবস্থান অনেক অনেক উন্নত হয়েছে। আমরা দারিদ্রের মতো অভিশাপকে অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। পাশ্ববর্তী দেশ থেকে আমরা অনেক ভালো করছি। যেহেতু অনেক ভালো করছি, সে কারণে আকর্ষণ বেড়েছে। অনেকে ফায়দাও লুটতে চাচ্ছেন।
বাংলাদেশে শান্তিতে আছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে গত ১৪ বছরে শান্তির স্থিতিশীলতা আছে। বাংলাদেশ এখন আর দরিদ্র দেশ না। দুনিয়াতে যে দেশে শান্তির স্থিতিশীলতা থাকে, সে দেশ উন্নত হয়। সিঙ্গাপুর, ইইউই দেখেন, যেখানে শান্তিশৃঙ্খলা আছে, ওখানে উন্নতিটা হয়। আর যেখানে অশান্তি থাকে, সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। উদাহরণ স্বরূপ লিবিয়া, সিরিয়া দেখেন।
বাঙালিদের ভূয়সী প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে ভালো জ্ঞান রাখে বাঙালিরা। কারণ এই দেশ হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম। যেখানে গণতন্ত্রের জন্য, মানবাধিকারের জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি। গণতন্ত্র, অধিকার, ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠিত করতে ৩০ লাখ বাঙালি রক্ত দিয়েছে। আর কোথাও ৩০ লাখ লোক রক্ত দেয়নি।
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা হয় বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (বিদেশিরা) আসছেন আমাদের বোঝাতে। এখানে প্রত্যেকের হৃদয়ে গণতন্ত্র। নির্বাচনে যান ৭০/৮০ ভাগের নিচে লোকে ভোট দেয় না। আর যারা আমাদের সুপারিশ দেন, তাদের দেশে মাত্র ২৫ শতাংশ লোক ভোট দেয়। আবার এসে বড় বড় কথা বলে। নিজেদের দিকে তাকায় না কেনো তারা? তাদের দেশে নির্বাচন করতে প্রার্থী পাওয়া যায় না। আর আমাদের দেশে একটি পদে ১০০ জন দাঁড় হয়ে যায়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, তারা (বিদেশি) কারও সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করতে চায়, তাতে আমাদের কি? এগুলো নিয়ে মাথা ব্যাথার কারণ নেই। আমাদের দেশে কোনো কিছু গোপনও করি না। আমরা খুবই স্বচ্ছ। আমাদের দেশে প্রতিদিন সাড়ে ১২ হাজার পত্রিকা, মাসে ১৮শ’ সাময়িকী বের হয়। আর কোথাও আছে? সুতরাং ওই হিসাব বন্ধ করেন। আপনারা পাত্তা না দিলেই ভালো।
এ সময় কমিউনিটি ক্লিনিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে দেশে যে কত উন্নয়ন হচ্ছে তা আমরা টের পাচ্ছি না। কমিউনিটি ক্লিনিক হওয়ার ফলে দেশে মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যু অনেক কমে গেছে। আগে তা প্রায় ৮৬ শতাংশ ছিলো। এরমধ্যে সিলেটে শিশু-মাতৃমৃত্যু সবচেয়ে বেশি ছিলো। এগুলো এখন অনেক কমে এসেছে।
সিলেটে আরও সাতটি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে সিলেট-১ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমাদের মোট ২৪টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক প্রয়োজন। আশা করছি দ্রুতই এগুলো পেয়ে যাবো।
মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ারসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
বিবার্তা/ফয়সাল/এসএফ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]