শিরোনাম
আশ্রয়ণ প্রকল্প: মির্জাপুরেও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভেঙে তছনছ! (পর্ব- ৪)
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৬:২০
আশ্রয়ণ প্রকল্প: মির্জাপুরেও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভেঙে তছনছ! (পর্ব- ৪)
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রী উপহারের ঘরগুলো ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে|ঘর নির্মাণের পর উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও বর্তমানে কেউ বসবাস করতে পারছে না।প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর এমন হাল দেখে হতবাক সবাই।বেশকিছু ভাঙাচোরা ঘর পড়ে আছে; সেখানে আবার কোনোটি জোড়াতালি দিয়ে নতুন করা হচ্ছে।স্থানীয় প্রসাশনের অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।


এদিকে, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রী উপহারের ঘরগুলো ভেঙে পড়ার কয়েকটি ছবি বিবার্তা২৪নেটের কাছে এসেছে।ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, একটি দেয়ালে লেখা রয়েছে, ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার’।তবে ওই লেখার উপরের অংশেই বড় একটি ফাটল দেখা গেছে।এছাড়াও অন্যঘরগুলোর দেয়ালও ভেঙে পড়েছে। শুধু তাই নয়, দেয়াল থেকে ইটগুলো ভেঙে নিচে পড়ে গেছে।



এলাকাবাসী বিবার্তাকে জানান, নির্মাণাধীন ঘরগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে ব্যবস্থাপনায় ছিল বড় গরমিল।আশ্রয়কেন্দ্রটির বেহাল অবস্থা দেখে যে চোখ কপালে উঠার মতো।ঘর উঠার আগেই ভেঙে পড়ছে সেগুলো।নিম্নমানের কাজের কারণেই নির্মাণাধীন অবস্থায়ই স্থাপনাগুলো ভেঙে পড়ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।


শুধু তাই নয়, ওই ইউনিয়নে যেসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে; সেইগুলোতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস নেই।তাই ঘরগুলো ব্যবহার করতে অনিহা প্রকাশ করেছেন উপকারভোগীরাও।



এ ব্যাপারে জানতে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হয়।এ সময় তিনি বিবার্তাকে বলেন, প্রথম ধাপে উপজেলায় ২৩৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে আরো ৭০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।প্রথম ধাপের ঘরগুলো ইতোমধ্যে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।দ্বিতীয় ধাপের ঘরগুলো নির্মাণকাজ শেষে হলে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


তবে প্রথম ধাপের ঘরগুলোর মধ্যে গোড়াই ইউনিয়নের ঘরগুলো ভেঙে গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছিল।পরে মেরামত করা হয়।তবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ না থাকায় সেখানে উপকারভোগীরা যাচ্ছেন না।তবে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের কাজ চলছে।কাজ শেষে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


নির্মাণকাজের অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি।তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।



পরে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনির সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।তবে তার পিএস ফোন রিসিভ করে বলেন, স্যার মিটিংয়ে আছেন।


আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মাহবুব হোসেন বিবার্তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে কোনো অফিস নেই।তবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন যে তথ্য আমাদের নজরে আসে সেটা আমরা আমলে নেই।



তিনি আরো বলেন, নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে ঘরের আকার কত হবে, কী ধরনের জমিতে নির্মাণ করা যাবে এবং ইট, বালি, রড, সিমেন্ট কতটুকু লাগবে ও কী পরিমাণ ব্যয় হবে।তারপরও ঘরে কেন ফাটল ধরলো বা ভেঙে পড়লো তা জানতে চাওয়া হবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।



উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে প্রথম ধাপে গৃহহীন ৬১৩ পরিবারকে দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার জমিসহ ঘর।গত ২৩ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর হস্তান্তরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এরপর টাঙ্গাইলের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জমিসহ ঘরের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়।জেলার ১২টি উপজেলায় মোট এক হাজার ১৭৪ জনকে জমি ও ঘর দেয়া হবে।এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৬১৩ জনকে জমি ও ঘরের কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থাণীয় প্রসাশন।


প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প: কলাপাড়ায় আড়াই কোটি টাকা লোপাট (পর্ব-১)


প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প: নির্মাণ শেষ হতে না হতেই ভেঙ্গে গেল ঘর (পর্ব- ২)


আশ্রয়ণ প্রকল্প: মেহেন্দিগঞ্জেও ভেঙে পড়ছে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের সেই ঘরগুলো (পর্ব-৩)


বিবার্তা/খলিল/গমেজ/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com