শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে নিয়মিত খান বিটের জুস
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০৯
শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে নিয়মিত খান বিটের জুস
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বিট দেখতে যেমনই হোক, খেতে মিষ্টি স্বাদের হয়, কিন্তু উপকারে বিট বিশেষভাবে উলেখযোগ্য। বিট সেই সঙ্গে মিষ্টি আলুর মতোই খুব অন্য রকম একটা মেটে ফ্লেভার পাওয়া যায় বিটে। বিট থেকে বিভিন্ন দেশে চিনিও উৎপাদিত হয়। 


আমাদের দেশে বহু বছরে ধরে সমস্ত সবজিবাজারে, এমনকি ঝাঁকা মাথায় ফেরিওয়ালার কাছেও বিট পাওয়া যায়। তারপরও এই বিট আমাদের কাছে মোটামুটি স্বল্প ব্যবহৃত আর অল্প পরিচিত হয়েই রয়ে গেল। একমাত্র বিশেষ দাওয়াতে বা বিয়েবাড়িতে মিক্সড সালাদের সঙ্গেই এ দেশে বিট খাওয়া হয়। অথচ বিশ্বব্যাপী সর্বত্র বিট একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সবজি। কাঁচা, রান্না করে বা বেকিংয়ে ব্যবহার করে এই সুমিষ্ট সুস্বাদু সবজি বহু রকম উপাদেয় উপায়ে খাওয়া যায়। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, স্বাস্থ্যগত দিক থেকে দেখতে গেলে বিট বা বিট রুটের আছে অনন্যসাধারণ সব উপকারিতা।


বিট আসলে একধরনের মূলজাতীয় সবজি। অর্থাৎ বিটগাছের মূলই হচ্ছে এর প্রধান খাদ্যোপযোগী অংশ। সাধারণত, এই বিটের মূল গাঢ় বেগুনি-লাল বর্ণের হয়ে থাকে। বিটের চোখজুড়ানো লাল রং আসলে বিটালাইন বা এন্থোসায়ানিনযুক্ত রঞ্জক পদার্থেরই অবদান। কিন্তু পৃথিবীতে হলুদ, সাদা, এমনকি বহুরঙা বিটরুটও পাওয়া যায়। অসম্ভব রসাল এই প্রধানত বেগুনি-লাল বিটে জলীয় অংশ অনেক বেশি। তাই খোসা ছিলতে বা কাটতে গেলেই একেবারে ছলকে রক্তবর্ণ রস বেরিয়ে আসে।


বিটের আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহরোধী এবং আমাদের শরীরকে ডিটক্স করা বা বিশুদ্ধীকরণের পরীক্ষিত ক্ষমতা। তবে এই বিটালাইন পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে আমাদের বিট যতটা সম্ভব কম সময় ধরে রান্না করতে হবে। কাঁচা খেলে এর গুণাগুণ পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি।


প্রতিদিন এক গ্লাস করে বিটের জুস খেলে মিলবে অনেক উপকার।


১. জুসে কমবে ব্লাড প্রেশার​


উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এখন প্রতি ঘরে ঘরে। আর এর ফলেই বাড়ছে হার্টের রোগ, কিডনির অসুখ, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা। তাই ব্লাড প্রেশার কমাতে হবে। বিটের জুসে থাকে নাইট্রেট যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই নাইট্রেট শরীরে প্রবেশ করে নাইট্রিক অক্সাইডে পরিণত হয়ে যায়।


​২. স্ট্যামিনা বাড়াতে​


বর্তমান দ্রুত গড়িয়ে চলা জীবনযাত্রায় শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। এমনকী অনেককে সারাদিন ক্লান্তি গ্রাস করে। তবে এ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করে বাজার থেকে কিনে আনুন বিট। তারপর এর রস করে পান করুন। এর মাধ্যমেই স্ট্যামিনা বাড়বে। আপনি এক্সারসাইজ করতে পারবেন অনায়াসে। তাই যারা নিয়মিত জিমে যান বা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করেন, তাদের বিট খেতেই হবে।


​৩. হার্টের রোগীদের পেশির জোর বাড়ে​


হার্ট ফেলিওর এক গুরুতর সমস্যা। এই রোগে হার্ট নিজের কর্মক্ষমতা অধিকাংশই হারিয়ে ফেলে। এমনকী কমে রোগীর গোটা দেহের পেশির জোর। তবে হার্ট ফেলিওর রোগীরা বিটের জুস খেলে উপকার পাবেন। এই জুসে থাকা নাইট্রেট পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। তবে আপনারা অবশ্যই এই জুস পান করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তারপরই এই জুস মুখে তুলুন। এছাড়া নিজের ওষুধ খাওয়ার কথা ভুলবেন না যেন।


​৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে​


ওজন বেশি হলে বহু অসুখ শরীরকে জাপটে ধরে। ডায়াবিটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ পরিস্থিতিতে খেতে পারেন বিটের জুস। এই জুসে ক্যালোরির মাত্রা থাকে খুবই কম। তাই অনায়াসে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়া এতে ফ্যাটের পরিমাণও প্রায় নেই। তাই সবরকমভাবেই সুস্থ থাকতে পারবেন।


​৫. ক্যানসার প্রতিরোধ করে​


ক্যানসারের নাম শুনলেই বুকটি ধক করে ওঠে। ক্যানসার প্রতিরোধে জোর দিতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে বিটে থাকে বিটালিনস। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে নিয়মিত বিটের জুস খান।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com