
আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদির বিরুদ্ধে কঙ্গোলিজ ও বিদেশি যোদ্ধারা জড়িত অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নস্যাতের দাবি করছে সরকার। অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় তিনজন নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ রবিবার সকালে দেশটির রাজধানীতে সামরিক পোশাকধারী সশস্ত্র ব্যক্তি এবং শীর্ষ রাজনীতিবিদের দেহরক্ষীদের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এই ঘটনাকেই সামরিক অভ্যুত্থান বলে দাবি করেছে সরকার।
ওই গোলাগুলিতে একজন হামলাকারী ও দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
রবিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিআর কঙ্গোর সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সিলাভিন একেনগে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী আরটিএনসি টিভিতে বলেছেন, বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে এবং ‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে’। স্থানীয় সময় রবিবার সকালে সাবেক চিফ অব স্টাফ ও প্রেসিডেন্ট শিসেকেদির ঘনিষ্ঠ মিত্র ভাইটাল কামেরহের বাড়িতে সশস্ত্র ব্যক্তিরা আক্রমণ করার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি এ বিবৃতি দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলেছে, সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা প্রায় ২০ জন হামলাকারীর একটি দল কামেরহের বাসভবনে হামলা চালায় এবং এরপর গোলাগুলি হয়। কামেরহের মুখপাত্র এবং জাপানি রাষ্ট্রদূত এক্সে পোস্টে বলেছেন, কামেরহের বাড়িতে হামলায় দুই প্রহরী এবং একজন আততায়ী নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি কঙ্গোর রাজধানীতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাগরিকদের বাইরে না যেতে সতর্ক করেছেন।
বিবিসি আরো জানিয়েছে, শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রেসিডেন্ট কার্যালয় প্যালাইস দে লা নেশনও দখল করা হয়েছে, যা রিপাবলিকান গার্ড দ্বারা অত্যন্ত সুরক্ষিত একটি জায়গা।
এদিকে প্রেসিডেন্ট শিসেকেদি এখন পর্যন্ত এ পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা নিউ জায়ার মুভমেন্টের সদস্য, যারা নির্বাসিত রাজনীতিবিদ ক্রিশ্চিয়ান মালাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। বিবিসি মালঙ্গার একটি ভিডিও দেখেছে, যেখানে তিনি স্থানীয় ভাষা লিঙ্গালায় বলছেন, আমরা সামরিক বাহিনী ক্লান্ত, আমরা ভাইটাল কামেরহে ও প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদির সঙ্গে চলতে পারি না।
গণমধ্যমটির তথ্য অনুসারে, গত বছরের ডিসেম্বরে বিতর্কিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট শিসেকেদি দ্বিতীয় মেয়াদে পুনর্নির্বাচিত হন। তিনি প্রায় ৭৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। ভোটের সময় নির্বাচনী সহিংসতায় প্রায় ২০ জন নিহত হয়। এ ছাড়া ডিআর কঙ্গো বিশাল খনিজ সম্পদ ও বিশাল জনসংখ্যার একটি দেশ। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষের জীবন উন্নত হয়নি, সংঘর্ষ, দুর্নীতি ও দরিদ্র শাসন অব্যাহত রয়েছে। দেশের পূর্বে পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিসেকেদির প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেশটির সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সিলভাইন একেঙ্গ বলেন, এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ঠেকানো তাদের বাহিনীর কাছে কঠিন কিছু না। এখন পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]