
রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে সাহায্য করতে কিয়েভকে গোপনে উন্নত দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যা ইতোমধ্যে দুইবার ব্যবহারও করেছে দেশটি।
মার্কিন কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এই অস্ত্রগুলি গত মার্চ মাসে দেয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজের অংশ ছিল। যা এ মাসে কিয়েভে পৌঁছেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে ইউক্রেন রাশিয়ার ক্রিমিয়াতে চালানো হামলায় এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এদিকে জো বাইডেন নতুন করে ইউক্রেনকে সহায়তায় ৬১ বিলিয়ন ডলারের একটি সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছে।
এর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ৩০০ কিলোমিটার রেঞ্জের কিছু এটিএসিএমএস (আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম) ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছিল।
দূরপাল্লার অস্ত্র পেলে ইউক্রেন রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাবে এবং এতে করে যুদ্ধ আরও ঘনীভূত হবে এই চিন্তা করে যুক্তরাষ্ট্র এতোদিন ইউক্রেনকে শক্তিশালী অস্ত্র দিতে কার্পণ্য করছিল।
তবে ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পাঠাতে সম্মত হন এবং মার্চে ইউক্রেনের জন্য তার সরকার ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘোষণা করে, যেখানে ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কিছু দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে দিয়েছি, সামনে আমরা আরও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাবো।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল জানান, ইউক্রেনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়টি জানানো হয়নি। তবে কি পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে সালিভান বা প্যাটেল কেউই কিছু জানাননি।
অস্ত্র সংকটের কারণে ইউক্রেনকে বিগত বেশ কিছুদিন যাবত অস্ত্র ব্যবহার সীমিত করতে হয়েছে। তবে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মার্কিন সিনেটে ৬১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ গৃহীতভ হওয়ায় ইউক্রেনের অস্ত্র সংকট কেটে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই মাসে ইউক্রেনকে দেয়া অস্ত্র ব্যবহার করে দেশটি ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এই অস্ত্রগুলো ইউক্রেন দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বারদিয়ানস্ক শহরে অবস্থানরত রাশিয়ান সৈন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করেছে।
মার্কিন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল ক্রিস্টোফার গ্র্যাডি জানান, হোয়াইট হাউজ এবং সামরিক পরিকল্পনাবিদেরা ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে অস্ত্রগুলো দেয়ার জন্য এখনই সঠিক সময়।
শুধুমাত্র ইউক্রেনের অভ্যন্তরে ব্যবহৃত হবে এই শর্তেই দূরপাল্লার অস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে দেয়া হয়েছে।
মার্কিন সরকারের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি ,আসে রাশিয়াকে উত্তর কোরিয়ার দেয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দেয়ার ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।
দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র পাওয়ার ব্যাপারটি ইউক্রেন সরকার এখনও স্বীকার করেনি।
তবে কতগুলো এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হয়েছে তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, ওয়াশিংটন আরো অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
তিনি আরো বলেন, এটি পার্থক্য তৈরি করবে। আমি আগেই বলেছি- কোন রূপালী বুলেট নেই।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]