তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে এরদোয়ানের ভরাডুবি
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৩২
তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে এরদোয়ানের ভরাডুবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে ভোট গণনা প্রায় শেষের দিকে। নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল ইস্তাম্বুল এবং আঙ্কারায় নিজেদের বিজয়ী বলে দাবি করেছে। গত দু’দশকেরও বেশি সময়ের রেকর্ড ভেঙে এরদোয়ান ও তার দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) প্রার্থীকে পরাজিত করে বিরোধীরা বড় ধরনের জয় পেয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।


এতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি)।


১ এপ্রিল, সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার তুরস্কে এ স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ১০ লাখেরও বেশি তরুণ ভোটার প্রথমবারের মতো তাদের ভোট দেন।


প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোটগ্রহণ শেষে ইস্তাম্বুলে ৯৫ শতাংশ ব্যালটের গণনা শেষে এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির প্রার্থীকে ১০ লাখের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন বলে জানান প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) মেয়র একরেম ইমামোগলু।


নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল সর্ববৃহৎ শহর ইস্তাম্বুল ও রাজধানী আঙ্কারায় জয় দাবি করেছে। ইস্তাম্বুলে সিএইচপি দলের বর্তমান মেয়র একরেম ইমামোগলু বলেন, তিনি এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির প্রার্থীকে ১০ লাখের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন।
আঙ্কারায় সিএইচপির মেয়র মানসুর ইয়াভাসও জয় দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে এই ফলাফলকে দেশের ‘শাসকদের জন্য এক স্পষ্ট বার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তুরস্কের তৃতীয় বড় শহর ইজমিরেও এগিয়ে রয়েছে সিএইচপি। এটাকে গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এরদোয়ান ও তার দল একে পার্টির জন্য সবচেয়ে বড় পরাজয় বলে মনে করা হচ্ছে।
তুরস্কে রবিবার (৩১ মার্চ) স্থানীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটগ্রহণ শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল ৭টায়। শেষ হয় বিকেল ৫টায়। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। নির্বাচনে ভোটার ছিল ৬ কোটির বেশি। ১০ লাখেরও বেশি তরুণ ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট দেন।


আগামী পাঁচ বছরের জন্য সিটি মেয়র, ডিস্ট্রিক্ট মেয়র ও অন্যান্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেন দেশটির নাগরিকরা। এই নির্বাচনে ঠিক হবে ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলের পাশাপাশি রাজধানী শহর আঙ্কারা ও ইজমিরের মেয়রও।


রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার এক বছরও হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এই নির্বাচনকে তার দলের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তবে সেই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন এরদোয়ান।


এবারের নির্বাচনে বেশ গুরুত্ব দিয়েই নিজ দলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন এরদোয়ান। বিশেষ করে রাজধানী শহর আঙ্কারা ও অর্থনৈতিক শহর ইস্তানবুলের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের নির্বাচনে এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট থাকতেই এই দুটি শহর তার পার্টির হাতছাড়া হয়ে যায়।


ওই নির্বাচনে এরদোয়ানের দলের প্রার্থী ও তৎকালীন মেয়র বিনালি ইলদিরিমকে হারিয়ে মেয়র হন বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) প্রার্থী একরাম ইমামোগলু। এবার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রত্যাশী ইমামোগলুর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন এরদোয়ানের দল একে পার্টির প্রার্থী সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মুরাত কুরুম।


প্রাথমিক ফলাফলের পর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফল তার জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) জন্য একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’। জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে জাতির সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।


নির্বাচনে দেশটির ৮১ প্রদেশে ৭৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ নির্বাচনের ফলের প্রেক্ষাপটে তুরস্কের রাজনীতি নতুন মোড় নিল। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একে পার্টির বিরুদ্ধে ইমামোগলু শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়াবেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


ফলাফলের পর বিরোধী সমর্থকরা বিজয় উদযাপন করতে ইস্তাম্বুলে জড়ো হয়। সে সময় হাজার হাজার মানুষ মশাল জ্বালিয়ে এবং তুর্কি পতাকা নেড়ে উল্লাস জানায়।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com