অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে মিয়ানমার জান্তা: জাতিসংঘ
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪, ২২:২৪
অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে মিয়ানমার জান্তা: জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা ইতোমধ্যে ‘অস্তিত্বগত হুমকির’ সম্মুখীন হয়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা জান্তার ‘দুঃস্বপ্নের’ শাসনের অবসান ঘটাতে সাহায্য করতে পারে।


বুধবার (২০ মার্চ) জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যানড্রুজ এ তথ্য জানিয়েছেন।


বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, জান্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা, সেইসাথে দলত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং নিয়োগের চ্যালেঞ্জগুলো সেনা সংখ্যা হ্রাসের দিকে পরিচালিত করেছে। বিষয়টি ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জন্য অস্তিত্বের হুমকি’ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।এমন অবস্থায় থাকার পর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটাতে পারে বিশ্ব।


তিনি বলেন, যারা মিয়ানমারে শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য জান্তার সাথে বাজি ধরেছে তারা হেরে যাওয়ার বাজি রেখেছে।


২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানে ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। এরপর থেকে দেশটির আঞ্চলিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো জান্তার ওপর হামলা শুরু করে। সম্প্রতি কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়েছে সামরিক বাহিনী।


অ্যান্ড্রুজ বলেন, জান্তা দেশের সহিংসতা, অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অবনতি এবং অনাচারের প্রধান চালক।


তিনি জানান, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো- আর্থিক প্রবাহের উপর বিধিনিষেধ এবং সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধ- জান্তার কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।


সাধারণ মানুষ সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ভয়াবহ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপগুলো। তাদের ধারাবাহিক আক্রমণে সেনাবাহিনী পর্যুদস্ত হওয়ার পথে। এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক এলাকা সেনাদের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।


এর প্রেক্ষিতে টম অ্যানড্রুজ বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতা, অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অবনমন ও আইনহীনতার জন্য মূল চালিকা শক্তি হলো সামরিক জান্তা। আর্থিক প্রবাহ ও সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জামের ওপর নিষেধাজ্ঞায় সামরিক জান্তার অপারেশন মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে।


এক্ষেত্রে তিনি সিঙ্গাপুরের নাম উল্লেখ করেন। এ দেশটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছে সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জাম বিক্রি কমিয়ে দিয়েছে। ফলে গত বছর মিয়ানমারে তাদের সরবরাহ দেয়া অস্ত্রের পরিমাণ শতকরা ৮৩ ভাগ কম হয়েছে।


কিন্তু তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঘটেনি রাশিয়া ও চীনের ক্ষেত্রে। তারা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছে অস্ত্র সরবরাহে যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থানে। সামরিক জান্তার টুটি চেপে ধরার জন্য আর্থিকভাবে আরও অনেক কিছু করা যেতে পারে।


তিনি বলেন, আমরা কিভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করছি তার মৌলিক পরিবর্তন দরকার। এটা আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট উপায়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে করতে হবে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে বাকি বিশ্বের ব্যাংকিং ও আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে তদন্ত করছেন টম অ্যানড্রুজ। এ নিয়ে বছরের শেষের দিকে রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা তার।


বিশ্ব যেহেতু অন্য যুদ্ধগুলোতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, তখন মিয়ানমারের ভবিষ্যতের দিকে বৈশ্বিক দৃষ্টির অভাব রয়েছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। টম বলেন, সামারিক জান্তা মাশরুমের মতো। তারা অন্ধকারে বেড়ে ওঠে।


মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ক্ষেত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করা গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির ভিতরে যে সাধারণ মানুষ আছেন তাদেরকে আরও সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও অনেক কিছু করতে হবে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com