
গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরুতেই ব্রাজিলে ভয়াবহ তাপদাহ গত এক দশকের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরো শহরে ৬২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
আলের্তো রিও ওয়েদার সিস্টেম জানিয়েছে, সোমবার শহরের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি রেকর্ড করা হলেও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ভয়াবহ উত্তাপ ঠিক কতটা অনুভূত হচ্ছে তার বিচারে ফিলস লাইক টেম্পারেচার ৬২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তীব্র গরমের কারণে রিওর দুই বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত ইপানেমা এবং কোপাকাবানায় রোববার ও সোমবার উপচে পড়া ভিড় ছিল বলে জানায় কাতারভিত্তিক আল জাজিরা।
আল জাজিরা জানিয়েছে, তীব্র গরমের কারণে রিও ডি জেনেরিওতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল, কলেজ ও বেশ কিছু অফিস। একটু শীতলতার খোঁজে শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছে কোপাকাবানা ও ইপানেমা সমুদ্র সৈকতে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, শুধু আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড করা তাপমাত্রা দিয়ে গরমের তীব্রতা বিচার করলে হবে না। এর সঙ্গে আদ্রতাসহ বেশ কিছু জিনিস বিবেচনায় নিতে হবে। সেসব জিনিস বিবেচনায় নিলে রিও ডি জেনেরিওর মানুষ এখন প্রায় সাড়ে ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুভব করছে। এটিকেই বলে ‘ফিলস লাইক টেম্পারেচার’।
৪৯ বছর বয়সী আবহাওয়াবিদ রাকুয়েল কোরিয়ে জানিয়েছেন, গত বছরের নভেম্বরে রিও-তে রেকর্ড ৫৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অনুভূত হয়েছিল । নির্বিচারে গাছ কাটা, বনাঞ্চল উজাড় করে বহুতল ভবন নির্মাণ, সড়কে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের কারণে রিও-তে এই উত্তাপ অনুভূত হচ্ছে।
রাকুয়েল বলেন, সামনের দিনগুলোতে অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে বলেই আমাদের আশঙ্কা। কারণ যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে, আবাসন বাড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে, পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তীব্র গরম, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
এর আগে ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত নভেম্বরে ৫৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে রিও যখন গরমে পুড়ছে, অন্যদিকে ভয়াবহ বৃষ্টি আবার ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রাজিলের আবহাওয়া তথ্য সংস্থা মেটসুল সতর্ক করে বলেছে, আগামী সপ্তাহটি দক্ষিণাঞ্চলের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সপ্তাহজুড়েই তীব্র ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে।
সোমবার মেটসুলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে পুরো দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বর্ষণ ও ঝোড়ো আবহাওয়া অব্যাহত থাকবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]