রাফায় অভিযান হবেই: নেতানিয়াহু
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫০
রাফায় অভিযান হবেই: নেতানিয়াহু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গাজার রাফাহ শহরে দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর অভিযান স্থগিত করতে যখন প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ঠিক তখনি হামাসকে নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় আমাদের লক্ষ্য চুড়ান্ত বিজয় এবং রাফায় অভিযান ব্যতীত এই লক্ষ্য পূরণ হবে না।


রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘যদি হামাসের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় চুক্তি হয়, তাহলে হয়তো রাফায় অভিযান শুরু করতে খানিকটা বিলম্ব ঘটতে পারে, কিন্তু আজ হোক, কিংবা পরে— (রাফায়) অভিযান শুরু হবে। এই অভিযান হবেই, কারণ গাজায় আমাদের লক্ষ্য চুড়ান্ত বিজয় এবং রাফায় অভিযান ব্যতীত এই লক্ষ্য পূরণ হবে না।’


‘আর অভিযান শুরু হলে তা স্থায়ী হবে এক মাসেরও কম সময় বা কয়েক সপ্তাহ। সেই বিবেচনায় আমরা বলতে পারি গাজায় চুড়ান্ত বিজয় অর্জন থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহ দূরে রয়েছি আমরা। আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি— হামাসকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করা ব্যতীত গাজায় চুড়ান্ত বিজয় সম্ভব নয় আর তা করতে হলে রাফায় অভিযান অপরিহার্য।’


এমন এক সময়ে নেতানিয়াহু এসব কথা বললেন, যখন রাফায় অভিযান স্থগিত করতে ইসরায়েলকে প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কারণ, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর গাজার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সীমান্তবর্তী শহর রাফায় এসেছেন প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি। এই ফিলিস্তিনিদের প্রায় সবারই লক্ষ্য সীমান্ত পেরিয়ে মিসরে আশ্রয় গ্রহণ।


প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যায়। অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।


চার মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।


ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর প্রায় এক মাস পর গত অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তুলেছিল রাশিয়া; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাতে ভেটো বা আপত্তির কারণে তা পাস হতে পারেনি।


তারপর আরও দু’দফায় নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ওঠার পর গত নভেম্বরে অস্থায়ী মানবিক বিরতিতে সম্মত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। মূলত কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই সম্ভব হয়েছিল এই বিরতি। সে সময় নিজেদের কব্জায় থাকা ২ শতাধিক জিম্মির মধ্যে অর্ধেক জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছিল হামাস, বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারগারে বন্দি দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েলও।


২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হওয়া সেই বিরতির পর ফের যুদ্ধ শুরু হয় ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে। তবে হামাসের হাতে এখনও শতাধিক জিম্মি রয়েছে। কীভাবে তাদের মুক্ত করা যাবে, সে সংক্রান্ত আলোচনা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে প্যারিসে।


আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত ইসরায়েলকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ইসরায়েল তাতে কর্ণপাত করছে না।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com