
মধ্যপ্রাচে চলমান উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কয়েকদিন ধরেই নিম্নমুখি। বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারী দেশ সৌদি আরব তার এশীয় ক্রেতাদের জন্য অপরিশোধিত তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে কমেছে ১ ডলারেরও বেশি।
তথ্য অনুসারে, সোমবার (৮ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৭৭ দশমিক ৮০ ডলারে এবং প্রতি ব্যারেল ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৭২ দশমিক ৮১ ডলারে।
আগের দিন রবিবারের তুলনায় ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে ১ দশমিক ২১ ডলার এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম কমেছে ১ দশমিক ৩৫ ডলার এবং গড়ে উভয় বেঞ্চমার্কের দাম কমেছে ১ ডলারের বেশি।
এদিকে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, এশীয় ক্রেতাদের জন্য নিজেদের অপরিশোধিত তেলের ফ্ল্যাগশিপ ব্র্যান্ড আরব লাইট ক্রুডের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত তেল উত্তোলন কোম্পানি আরামকো। আরামকোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত এশীয় ক্রেতারা প্রতি ব্যারেল আরব লাইট ক্রুডে ১ দশমিক ৫ ডলার থেকে ২ ডলার পর্যন্ত ছাড় পাবেন।
রবিবার আরামকো এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর সোমবারই আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচে চলমান উত্তেজনার মধ্যে শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব কতৃক তেলের মূল্য হ্রাস এবং জ্বালানি তেল উৎপাদক দেশগুলো জোট ওপেকের তেল উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে।
সোমবার ১ দশমিক ০৯ শতাংশ বা ৮৬ সেন্ট কমে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ড ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৭৭ দশমিক ৯০ ডলারে।
অন্যদিকে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ৮৫ সেন্ট কমে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৭২ দশমিক ৯৬ ডলারে।
জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, হামাস ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ ও তার জেরে লোহিত সাগরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলার জেরে এশীয় ক্রেতারা যেন অন্য কোনো তেল উৎপাদনকারী দেশের প্রতি ঝুঁকে না পড়ে— সেজন্যই এই মূল্যছাড় দিয়েছে সৌদি।
ডলারের দাম লাগামহীন ভাবে বাড়তে থাকায় উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলো গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তেল কেনা কমিয়েছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে মন্দাভাব।
এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে গত বছর থেকে তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয় জ্বলানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। কিন্তু একই সময় যুক্তরাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ তেলের উত্তোলন বৃদ্ধি করায় বাজারের মন্দা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি।
তেলের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি বড় রুট লোহিত সাগর। বিশ্লেষকদের মতে, বাজার স্বাভাবিক করার গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্ত হলো লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]