বাইডেনের ৩ মাস পর ভিয়েতনামে শি জিনপিং
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:৩৭
বাইডেনের ৩ মাস পর ভিয়েতনামে শি জিনপিং
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ১২ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ভিয়েতনামে পৌঁছেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বাইডেনের সফরের ঠিক ৩ মাস পর হ্যানয়ে গেলেন চীনা প্রেসিডেন্ট।


চীন ও ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। গতবছর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুয়েন ফু চাংকে বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছিল চীন।


বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন সবসময়ই ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। ভিয়েতনামও সমমনোভাবাপন্ন দেশ। তাই ভিয়েতনাম চীনের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পায়।


একইসঙ্গে ভিয়েতনামকে নিয়ে কিছুটা অখুশি চীন। কারণ, ভিয়েতনাম এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সঙ্গীদের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো করছে। গত সেপ্টেম্বরে বাইডেন ভিয়েতনাম সফর করেছেন। তখন ভিয়েতনাম ও আমেরিকার মধ্যে শান্তি, সহযোগিতা ও উন্নয়নের জন্য কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি সই হয়েছে।


এর ফলে ভিয়েতনাম তাদের কৌশলগত অংশীদার হিসাবে আমেরিকাকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে। চীন, ভারত, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানও তাদের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার।


চ্যাথাম হাউসের এশিয়া-প্যাসিপিক প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত বিল হেইটন জানিয়েছেন, নিজেদের স্বাধীন সত্তা বজায় রাখতেই ভিয়েতনাম অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো বাড়িয়েছে।


তার মতে, চীন বিশাল বড় দেশ। কিন্তু ভিয়েতনাম চীনের কক্ষপথে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না। তারা এশিয়ার দেশগুলি ও চীনের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আবার তারাই যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো করছে। এভাবেই তারা সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিজেদের স্বাধীন মনোভাব দেখাচ্ছে।


চীনের সঙ্গে ২০০৮ সালে ভিয়েতনামের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি হয়েছিল। চীনই হলো ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২১ সালে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। আমেরিকা ও ভিয়েতনামের বাণিজ্যের পরিমাণ একই বছরে ছিল ১১ হাজার কোটি ডলার।


শি ও ভিয়েতনামের নেতাদের মধ্যে আলোচনায় বাণিজ্য খুবই গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন ইউসফ ইশাক ইনস্টিটিউটের গবেষক নুয়েন খাক জিয়াং। তিনি বলেছেন, শি-র এই সফরের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব খুব বেশি। আর এই সফরের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হবে।


তবে তিনি বলেছেন, চীনের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক উদ্যোগে যোগ দেওয়া নিয়ে ভিয়েতনাম খুবই সাবধানে পা ফেলবে। দুই দেশই আর্থিক সহযোগিতার উপরে জোর দেবে। ভিয়েতনাম চাইবে, চীন তাদের দেশে আরো বিনিয়োগ করুক।


উল্লেখ্য, চীনের সঙ্গে ভিয়েতনামের পুরোনো সম্পর্ক থাকলেও, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই দ্বন্দ্বও শত বছরেরও বেশি পুরোনো। তবে শি জিনপিংয়ের এই সফরে দুই দেশের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করার বিষয়টি আলোচিত হতে পারে। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট।


ভিয়েতনামের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত একটি পত্রিকায় লিখিত এক নিবন্ধে শি জিনপিং বলেছেন, এশিয়ার ভবিষ্যৎ এশীয়দের হাতেই নির্ধারিত হবে, অন্য কারও হাতে নয়। এ থেকে ইঙ্গিত স্পষ্ট যে, চীনা প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনামে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাধান্য দেখতে চান না।


শি জিনপিং আরও লিখেন, দুই দেশের মধ্যে একটি সাধারণ ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠলে তার কৌশলগত গুরুত্ব খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হবে। ওই নিবন্ধে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে বিশ্বজুড়ে ‘হেজিমনি’ প্রতিষ্ঠার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তা থেকে দূরে থাকার ব্যাপারেও সতর্ক করেন।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com