কুকুরের মাংস দক্ষিণ কোরিয়ার রন্ধনশৈলীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বছরে প্রায় ১০ লাখ কুকুর সেখানে খাওয়া হয়। সম্প্রতি সেখানে কুকুরের মাংসের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। কারণ, তরুণ প্রজন্ম কুকুরকে খাদ্য হিসেবে দেখার চেয়ে মানুষের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে দেখতে বেশি পছন্দ করছে।
এবার দক্ষিণ কোরিয়ায় আইন করে নিষিদ্ধ হতে চলেছে কুকুরের মাংস খাওয়া। বিতর্কিত এই শতাব্দী-প্রাচীন প্রথাটি এই মুহূর্তে দেশটিতে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ বা বৈধও নয়। মিডিয়া রিপোর্টের বরাত দিয়ে রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি। মূলত পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির আইন প্রণেতারা কুকুরের মাংস বিক্রি এবং খাওয়া নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে আইন প্রবর্তনের পরিকল্পনা করছেন।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার এই আইনটি প্রস্তাব করে এবং অবিলম্বে সেটি সমর্থন করে দেশটির ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি। আর এতেই বিলটি পাস করার জন্য যথেষ্ট ভোট মিলেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের পলিসি কমিটির প্রধান পার্ক ডাই-চুল বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় ১০ মিলিয়ন পরিবার পোষা প্রাণী লালন-পালন করে। আর তাই এখনই সময় কুকুর খাওয়া বন্ধ করার।’
আরটি বলছে, পার্ক তার দলের প্রধান নীতিনির্ধারক এবং তিনি ‘কিম কিওন-হি’স বিল’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন, যেটি দেশের ফার্স্ট লেডিকে উল্লেখ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এই ফার্স্ট লেডি তার দেশে কুকুরের মাংস খাওয়ার অনুশীলন বন্ধ করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।
অবশ্য এই নামকরণটি নিজ দলের সহকর্মী সদস্যদের কাছ থেকেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যারা পার্ককে দেশের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ধূর্ততার অভিযোগ এনেছিলেন।
রুশ এই সংবাদমাধ্যম বলছে, ফার্স্ট লেডি সব ধরনের কুকুরের মাংসের ব্যবসা এবং খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন। গত মাসে তিনি দেশের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটাতে একটি আইন পাস করার আহ্বানও জানিয়েছিলেন।
একইসঙ্গে সেসময় তিনি ‘কুকুরের মাংস খাওয়া বন্ধ করার জন্য প্রচারাভিযান এবং প্রচেষ্টা চালানোর’ প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। গত আগস্টের শেষের দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মানুষ এবং প্রাণীদের সহাবস্থান থাকা উচিত। অবৈধ কুকুরের মাংস নিয়ে চালানো কার্যক্রম বন্ধ করা উচিত।’
অবশ্য কুকুরের মাংস খাওয়া কোরিয়ান উপদ্বীপে একটি শতাব্দী প্রাচীন প্রথা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এটি হ্রাস পাচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে খামারের সংখ্যা অর্ধেকে হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু কুকুর খামারি সমিতির মতে, প্রতি বছর এখনও ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ কুকুর খাওয়ার উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়। যদিও এই সংখ্যা এক দশক আগের থেকে অনেক হ্রাস পেয়েছে।
বিবার্তা/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]