
যে কোনো দেশকে সমরাস্ত্র দেওয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে তাদের ওপর কোনো ধরনের সীমাবদ্ধতা নেই বলে জানিয়েছেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মাদ রেজা আশতিয়ানি।
গতকাল রোববার ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশিয়ার কাছে ইরানের অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে পশ্চিমাদের আপত্তির মধ্যেই আশতিয়ানি বলেন, বিশ্বের যে দেশই ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করবে, ইরান সে দেশকে সহযোগিতা করবে। ভেনিজুয়েলার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক এবং সে দেশে অস্ত্র রপ্তানির সম্ভাবনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তবে দেশটির ওপর মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা থাকাবস্থায় এটি কীভাবে বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে তার ব্যাখ্যা আশতিয়ানি দেননি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভেনিজুয়েলা একটি বড় রাষ্ট্র এবং দেশটির অবস্থান কৌশলগত দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভেনিজুয়েলার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও রক্ষা করা হবে।
এ সময় তিনি জানান, অন্য দেশকে অস্ত্র দেওয়ার পাশাপাশি ইরান প্রয়োজনে সমরাস্ত্র আমদানিও করবে। শিগগিরই ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমান সুখই সু-৩৫ এর প্রথম চালান গ্রহণ করবে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগের কারণে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০০৭ সালে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ২০২০ সালের অক্টোবরে ইরানে অস্ত্র রপ্তানির ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরও ওই নিষেধাজ্ঞা রয়ে যায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞাগুলোর মধ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সরবরাহ, বিক্রয় বা স্থানান্তর, সামগ্রী, সরঞ্জাম, পণ্য এবং প্রযুক্তি, গোলাবারুদ, সামরিক যান, আধাসামরিক সরঞ্জাম এবং সমস্ত ধরনের খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি-রপ্তানি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির অংশ হিসাবে, ১৪ জুলাই ২০১৫ জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) স্বাক্ষরিত হয়। সে সময় ইইউ জানিয়ছিল, ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ইতিবাচক প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে তারা আট বছর পর এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইরানের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১৮ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত। তবে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে আইএইএর ইতিবাচক প্রতিবেদন পাওয়া এবং এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষকরা।
আশতিয়ানি বলেন, যে দেশ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে ইরান সেই দেশকে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে যদি আমরা প্রয়োজন বোধ করি, তাহলে যে কোনো দেশ থেকে প্রযুক্তি সুবিধা আমদানি করব।
বিবার্তা/লিমন/নিলয়
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]