শিরোনাম
সারা বছরই শসা কেন খাবেন?
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:০২
সারা বছরই শসা কেন খাবেন?
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গরমকালে এর জনপ্রিয়তা বাড়লেও শীতের মরসুমে আমাদের ধারে কাছে এদের তেমন একটা দেখা যায় না। কিন্তু এমনটা হওয়া একেবারেই উচিত নয়।


কারণ গবেষণা বলছে শরীরকে মজবুত ও সচল রাখতে প্রতিদিন যে যে উপদানগুলোর প্রয়োজন হয় তার সবকটাই মজুত রয়েছে শসাতে। যেমন ভিটামিন কে, সি, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, রাইবোফ্লবিন, বি৬, ফলেট, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, আয়রন, সিলিকা, ক্যালসিয়াম ও জিঙ্ক।


তাই শুধু গরমের সময় নয়, বছর জুড়েই শসা খাওয়ার প্রয়োজন। শরীরকে চাঙ্গা রাখতে যে নিয়মিত শসা খাওয়া উচিত, সে সম্পর্কে না হয় কোনও সন্দেহ নেই!


কিন্তু প্রশ্ন হল এই প্রাকৃতিক উপাদানটি পুষ্টির ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি শরীরের আর কী কী উপকার করে?


১. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে হার্টকে চাঙ্গা রাখতে বাস্তবিকই এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে শসায় উপস্থিত লেরিসিরেসিনোল শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে হার্টের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে থাকে না বললেই চলে।


২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: পরিবারে কি এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে? তাহলে রোজের ডায়েটে শসাকে অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না যেন! আসলে এতে উপস্থিত পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরে লবণের প্রভাবকে কমাতে শুরু করে, যে কারণে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।


৩. খনিজের চাহিদা মেটে: খেয়াল করে দেখবেন অনেকেই ত্বকের পরিচর্যায় শসাকে কাজে লাগিয়ে থাকেন। কেন এমনটা করেন, জানেন? আসলে শসার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও সিলিকন। এই সবকটি খনিজ শরীরের উন্নতির পাশাপাশি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যদি অল্প দিনেই তরতাজা ত্বক পেতে চান, তাহলে আজ থেকেই কাজে লাগানো শুরু করতে পারেন শসাকে।


৪. দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে: শসা দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে সানস্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে ত্বক পুড়ে গেলেও শসা লাগাতে পারেন। কারণ পোড়া ভাব কমাতে শসা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।


৫. কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ কমে: কোষ্ঠকাঠিন্যে কমাতে শসার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই সবজিটির অন্দরে উপস্থিত ফাইবার, শরীরের ভিতরে বর্জ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।


৬. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাস্তবিকই এই ফলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে শসা খাওয়া মাত্র শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিস সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।


৭. ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকে: বর্তমানে বিশ্বে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সেই সব খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত যাতে এই মারণ রোগ দূরে থাকে। আর এক্ষেত্রে শসাকে বাদ দেয়া কোনোভাবেই চলবে না। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, শসাতে এমন কিছু উপাদান আছে, যা ক্যানসার প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।


৮. শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যায়: শসার শরীরে উপস্থিত বিপুল পরিমাণ জল দেহের অন্দরে প্রবেশ করা মাত্র জমে থাকা টক্সিক উপাদনকে ধুয়ে মুছে বার করে দেয়। ফলে শরীরে বিষের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে কোনো ধরনের রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে।


৯. পানির ঘাটতি দূর হয়: শরীরে পানির মাত্রা স্বাভাবিক থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই তো প্রতিদিন শসা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। তাদের মতে, শসায় আছে প্রায় ৯৬ শতাংশ পানি, যাতে খুব সহজেই পানির ঘাটতি দূর করে ডিহাইড্রেশন হওয়ার আশঙ্কা কমানো সম্ভব।


১০. ভিটামিনের ঘাটতি দূর হয়: শরীরকে সচল রাখতে ভিটামিনের প্রয়োজন পরে। সেই ভিটামিনের যোগান ঠিক রাখতে শাসা খাওয়া উচিত। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বি ও এ থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি এনার্জির ঘাটতি দূর করতে এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য় বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।


১১. পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়: ৩০০ গ্রাম শসার প্রায় ১১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম ফাইবার, দিনের চাহিদার প্রায় ১৪ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৬২ শতাংশ ভিটামিন কে থাকে। সেই সঙ্গে থাকে দিনের চাহিদার ১০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম, ১৩ শতাংশ পটাশিয়াম এবং ১২ শতাংশ মেঙ্গানিজ। এই সবকটি উপাদানই আমাদের শরীরের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো নিয়মিত পরিমাণ মতো শসা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।


১২. ওজন কমে চোখে পরার মতো: অতিরিক্ত ওজনের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে সকাল-বিকাল শসা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ শসাতে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান শরীরে মজুত অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com