করোনার নতুন আতঙ্ক পিরোলা
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:৫৭
করোনার নতুন আতঙ্ক পিরোলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আবার নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। প্রতিনিয়ত রূপ বদলে করোনাভাইরাস টিকে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে পরিবেশে। সেই ধারাতেই ভাইরাসটি নতুন রূপ পিরোলা পিল পিল করে বেড়েই চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি করোনার একটি নয়া রূপ আত্মপ্রকাশ করেছে। করোনার বিএ.২.৮৬ ভ্যারিয়ান্ট রূপ বদলে নতুন করে ফিরে এসেছে। নয়া এই ভ্যারিয়ান্টের নাম দেওয়া হয়েছে জেএন.১।


করোনার নতুন রূপ পিরোলা ভাইরাস এরই মধ্যে ১১ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আর যে গতিতে ছড়াচ্ছে সেটি নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এখন পর্যন্ত পিরোলার মারণ ক্ষমতা সম্পর্কে পরিস্কার কোন ধারণা পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মানষের অ্যান্টিবডিকে দুর্বল করে দিচ্ছে।


মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এই নতুন প্রজাতি। এমনি অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাল স্ট্রেনের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়, কিন্তু পিরোলার এমন ক্ষমতা আছে যা অ্যান্টিবডির গুণই নষ্ট করে দিতে পারে। আর এ কারণেই চিন্তিত বিশ্বের শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি বিএ.২.৮৬ নামের এই ভাইরাসের অস্তিত্বের খোঁজ পায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নতুন এই প্রজাতি আসলে ওমিক্রনের আরেক রূপ। ডেনমার্ক, ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন চারটি দেশে এখন পর্যন্ত পিরোলা ছড়িয়ে পড়ার খবর নিশ্চিত করেছে।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, আরও বেশ কিছু দেশে পিরোলা ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এই রূপ কতটা ভয়ঙ্কর ও সংক্রামক, সে সম্পর্কে এখনও যথেষ্ট তথ্য হাতে তাদের আসেনি বলে। এ জন্য আরও নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।


তাই পিরোলাকে এখন ‘ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার মনিটরিং’ গোত্রের মধ্যে রেখে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। তবে, এই নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইয়েল মেডিসিন জানিয়েছে, উদ্বেগের কারণ মিউটেশন বেশি থাকা। ডেল্টা ও ওমিক্রন রূপের সঙ্গে পিরোলার অনেকটাই মিল আছে।


আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে খোঁজ মিলেছিল করোনার এই নতুন উপপ্রজাতির। দেশটির সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সসহ বিশ্বের ১১টি দেশে এই প্রজাতি খুঁজে পাওয়া গেছে। এই উপপ্রজাতিকে পিরোলা নামেও ডাকা হচ্ছে।


ওমিক্রনের জেনেটিক মিউটেশনের ফলেই নতুন এই প্রজাতি তৈরি হয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের। যদিও প্রজাতির সংক্রমণের আক্রান্তের সংখ্যা এখন খুবই কম। তবে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, পিরোলা দ্রুত হারে মানুষের শরীরে ছড়াতে শুরু করলে অনেক বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।


ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, নতুন এই প্রজাতিতে বার বার মিউটেশন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যার মধ্যে স্পাইক প্রোটিনেই ২০ বার অ্যামাইনো অ্যাসিডের কোড বদলে গেছে। মানুষের শরীরে এই প্রজাতি খুব দ্রুত ছড়াতে পারে বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।


ওমিক্রন এই উপপ্রজাতি কতটা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর সংক্রমণে এখনও পর্যন্ত খুব জটিল রোগ হতে দেখা যায়নি। এই প্রজাতি যেহেতু খুব দ্রুত মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে তাই উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আরো একটা বৈশিষ্ট্য রয়েছে পিরোলার। এটি অ্যান্টিবডির ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। অ্যান্টিবডি ভাইরাল স্ট্রেনের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়, কিন্তু পিরোলার এমন ক্ষমতা আছে যা অ্যান্টিবডির গুণই নষ্ট করে দিতে পারে।


ভাইরোলজিস্টদের মতে, সংক্রামক ভাইরাস যত বেশি মানুষের শরীরে ছড়াবে, ততই তার জেনেটিক সিকুয়েন্স বা জিনগত বিন্যাসের বদল হবে। মানুষের শরীরে ছড়াতে হলে ভাইরাসকে সংখ্যায় বাড়তে হবে, তাই দ্রুত তার বিভাজন হবে। আর যত বেশি বিভাজন হবে ততই ভাইরাস নিজেকে নতুন করে তৈরি করে নেবে, সংক্রামক থেকে অতি সংক্রামক হয়ে উঠবে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com