জনবল সংকটে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৫
জনবল সংকটে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক অনুমোদন কাগজে কলমে না থাকলেও রয়েছে শুধু মুখে। তাই সেবা কার্যক্রম চলছে পূর্বের ১০০ শয্যার লোকবল দিয়ে। এতে চিকিৎসক সংকটে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে দ্রুত জনবল নিয়োগসহ অবকাঠামো প্রদানের দাবি কর্তৃপক্ষসহ সেবা প্রত্যাশীদের।


জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ২৮ লাখ। চিকিৎসা সেবা প্রদানে ১৯৬৯ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নওগাঁ সদর হাসপাতাল চালু হয়। এরপর ২০১৩ সালে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে প্রায় ২০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৮ম তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ভবনটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুরনো ভবনের সাথে নতুন ১৫০ শয্যা ভবন যুক্ত হয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২০২০ সালের ৩১ আগস্টে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখন শুধু মুখে মুখে। বাস্তবে এর কোন রুপ নাই। পূর্বে যে জনবল দিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হতো ২৫০ শয্যার ক্ষেত্রেও তাই। জেনারেল হাসপাতাল হওয়ার পর থেকে সেবা নিতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। জেলাবাসীর ভরসার একমাত্র আস্থা এ হাসপাতাল। উপজেলা থেকে সেবা নিতে আসেন রোগীরা। তবে হাসপাতালের কেবিনগুলোর কার্যক্রম শেষ হলেও সেগুলো চালু হয়নি। এতে সরকার যেমন একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে অপরদিকে যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলাবাসী।


হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ার পর জেলাবাসীর স্বপ্ন ছিল চিকিৎসা সেবার মান বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো চিত্র। ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল হলেও কার্যক্রম চলছে ১০০ শয্যার লোকবল দিয়ে। আবার ওই ১০০ শয্যার জন্য যে পরিমাণ চিকিৎসক প্রয়োজন সেটাও নেই। এতে করে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।


হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ৪৫ জন, সেখানে রয়েছেন মাত্র ২৪ জন। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ রয়েছে ১৩০ জনের, সেখানে রয়েছে মাত্র ৫৭ জন। ৮১টি নার্সের পদের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ১৭ জন। প্রতিদিন আউটডোরে ১ হাজার থেকে ১২শ এবং ইনডোরে দুই শতাধিক রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।


হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল ইসলাম বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল বলা হলেও এখন পর্যন্ত অনুমোদন রয়েছে ১০০ শয্যার। তবে এই ১০০ শয্যার হাসপাতাল চালাতে যে পরিমাণ জনবল দরকার তা এখানে নেই। এতে করে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও এখন পর্যন্ত সাড়া পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পাওয়া গেলে ডাক্তার, সেবিকা, ঔষধ ও অবকাঠামোসহ সবকিছু দ্বিগুণ হবে, সেবার মান বাড়বে।


তিনি আরও বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজের নিজস্ব কোন ভৌত অবকাঠামো না থাকায় হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ২য় তলায় তাদের কার্যক্রম চলছে। এই ভবন থেকে মেডিকেল কলেজ সরানোর প্রয়োজন। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর পর পুরাতন ভবনে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২৫০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন, জনবল নিয়োগ এবং অবকাঠামোগত সুবিধা দেওয়া হলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বাড়ার পাশাপাশি জেলাবাসীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।


বিবার্তা/রাকিব/জামাল


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com