শিরোনাম
বেড়ে চলেছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ
প্রকাশ : ১০ জুন ২০১৯, ২৩:০১
বেড়ে চলেছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছে ব্যাংকগুলো। বড় ঋণগুলো আদায় হচ্ছে না। অনেকে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে ঋণখেলাপি থেকে নিজেকে বিরত রাখার সুযোগ পাচ্ছেন। এতে গ্রাহক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও ব্যাংকগুলোর খারাপ সম্পদের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।


এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ।


২০১৮ সালের একই সময়ে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। যা ছিল ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের কোনো এক বছরে এতো বেশি খেলাপি ঋণ বাড়েনি।


ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খাতে দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও কর্মদক্ষতার অভাবে মানসম্পন্ন সম্পদের পরিমাণ কমেছে। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ বাড়ছে।


এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাংকগুলোতে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার জন্য তিনি ব্যাংকের এমডিদের দুর্বলতাকে দায়ী করেন।


ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদায় অযোগ্য কু-ঋণ।


বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মার্চ শেষে সবগুলো ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। আর রাইট অফ (অবলোপন) করা ঋণ খেলাপি ঋণের সঙ্গে যোগ করলে যা দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।


বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকই রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের। মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা।


এসময় রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে এক লাখ ৬৭ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।


বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ সময় তাদের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা


অন্যদিকে, খেলাপি ঋণ বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও। মার্চ শেষে ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৪৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা।


আর দেশে পরিচালিত ৯টি বিদেশি মালিকানার ব্যাংকে চলতি বছরের মার্চ শেষে মোট ৩৬ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা বিতরণ করে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। যা বিতরণ হওয়া ঋণের ৬ দশমিক ২০ শতাংশ।


সম্প্রতি ঋণ খেলাপি নীতিমালা, রাইট অফের নীতিমালা পরিবর্তন হয়েছে। এরপরও ব্যাপক হারে বেড়েছে খেলাপি ঋণ।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের চাপ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্বের অভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে সুদের হারও খেলাপি ঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।


সম্প্রতি ব্যাংক খাতে সুদের হার কমেছে বলে ব্যাংকারদের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও বাস্তবে তা খুব একটা কমেনি। সময় যতো যাচ্ছে খেলাপি ঋণের নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com