পণ্য খালাসে গতি আনতে চট্টগ্রাম বন্দরে অত্যাধুনিক নিউমেটিক কনভেয়র স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে জাহাজ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খোলা পণ্য খালাসের জন্য প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করে নিউমেটিক কনভেয়র আমদানি করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নিউমেটিক কনভেয়র হচ্ছে এমন একটি বেল্ট যেটি জাহাজের হেজে লাগিয়ে দিলে ওখান থেকে পণ্য টেনে জেটিতে নিয়ে আসা হয়। ওখান থেকে ট্রাকে বোঝাই করে পণ্য বন্দরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বন্দর সূত্র মতে, বেলজিয়াম নির্মিত কনভেয়রটি স্থাপন হলে চট্টগ্রাম বন্দরে এক সপ্তাহে খালাস হয় এমন খোলা পণ্য একদিনেই খালাস হবে।
বন্দর সূত্র মতে, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে চাল ডাল সরিষাসহ বিভিন্ন ভোগ্য পণ্যের চালান আমদানি হয়। এসব পণ্য জাহাজে খোলা অবস্থায় আনা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়ার পর জাহাজগুলো থেকে গ্রেবের সাহায্যে পণ্য খালাস করা হয়। জাহাজের হেজের ভেতরে শ্রমিক নেমে গ্রেবের জন্য বস্তা ভর্তি করে তৈরি করে দিতে হয়। এতে দীর্ঘ সময় লাগে। এক একটি জাহাজকে আট দশদিনও বন্দরে অপেক্ষা করতে হয়।
সূত্র মতে, বিশ্বমানের বন্দরগুলোতে এভাবে খোলা পণ্য খালাস করা হয় না। ওই সব বন্দরে নিউমেটিক কনভেয়র দিয়ে পণ্য খালাস করা হয়। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরের শত বছরের ইতিহাসে এ ধরনের কোন নিউমেটেক কনভেয়র ছিল না। চট্টগ্রাম বন্দরে কমপক্ষে চারটি কনভেয়র লাগে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি নিউমেটিক কনভেয়র কেনার জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কার্যাদেশ দিয়েছে।
জানা গেছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে বেলজিয়াম থেকে এই নিউমেটিক কনভেয়র চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছবে। প্রায় সাত কোটি টাকা দামের কনভেয়রটি মোবাইল ইক্যুপমেন্ট হিসেবে বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে ব্যবহার করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (এডমিন এন্ড প্ল্যানিং) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের বন্দরে পরিণত করতে নানামুখী প্রক্রিয়া চলছে। এরই অংশ হিসেবে সংগ্রহ করা হচ্ছে নিউমেটিক কনভেয়র। এটি স্থাপিত হলে চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে যেই জাহাজটির পণ্য খালাস করতে দশ দিন লাগছে তা তিন দিনে করা সম্ভব হবে।
এতে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, একটি জাহাজ যদি একদিন আগেও বন্দর ছেড়ে যেতে পারে তাহলে কমপক্ষে দশ হাজার ডলার ফিক্সড অপারেটিং কস্ট বা এফওসি সাশ্রয় হয়। একটি জাহাজ সাতদিন সাশ্রয় করতে পারলে সত্তর হাজার ডলার বা পঞ্চাশ লাখ টাকারও বেশি সাশ্রয় হবে। যে টাকার যোগান দেশের সাধারণ ভোক্তা শ্রেণীকে দিতে হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মোহাম্মদ জাফর আলম।
নিউমেটিক কনভেয়র ইক্যুপমেন্টটির প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন দেখতে একটি টিম আগামী ৭ অক্টোবর বেলজিয়াম যাচ্ছেন বলেও বন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]