আখাউড়া স্থলবন্দরে বেড়েছে রফতানি, শীর্ষে মাছ ও সিমেন্ট
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৫৫
আখাউড়া স্থলবন্দরে বেড়েছে রফতানি, শীর্ষে মাছ ও সিমেন্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে পণ্য রফতানি বাণিজ্য। চলতি অর্থবছরে প্রথম আট মাসে (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি) এ বন্দর দিয়ে ৩৬৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৭৯ টাকার পণ্য রফতানি হয়েছে। সর্বশেষ অর্থবছরে একই সময়ে রফতানি করা হয়েছিল ৩১৬ কোটি ২০ লাখ ৫১ হাজার ৯৪৫ দশমিক ৯ টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫১ কোটি ৩৭ লাখ ৭ হাজার ২৩৩ দশমিক ১ টাকা। রফতানি হওয়া পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে হিমায়িত মাছ ও সিমেন্ট। তবে রফতানি বাড়লেও এ বন্দর দিয়ে নানা কারণে পণ্য আমদানি কমেছে।


সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে বাণিজ্য বাড়তে থাকায় ২০১০ সালে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আখাউড়া স্থলবন্দর। শুরু থেকেই রফতানিমুখী স্থলবন্দরটি। বর্তমানে প্রতিদিন হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্য তেল, তুলা, ফার্নিচার ও খাদ্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানি হয় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। সেখান থেকে রফতানি পণ্য সরবরাহ হয় ত্রিপুরার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে।


বর্তমানে রফতানি হওয়া পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে হিমায়িত মাছ ও সিমেন্ট। প্রতিদিন অন্তত ৪০-৫০ টন পাঙ্গাস, পাবদা, কাতলসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এবং প্রায় ৭০ টন সিমেন্ট রফতানি হয় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে।


আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতে রফতানি হয়েছে ৪২৭ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৪৩০ টাকার পণ্য। এর বিপরীতে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৭ কোটি ৫ হাজার ২০৩ টাকার পাথর, পেঁয়াজ, আদা ও জিরা। এ থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব পেয়েছে ৪ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৪৬ টাকা। মূলত পাথর আমদানিতে শুল্ক বেশি হওয়ায় রাজস্বের পরিমাণ বেড়েছে। আর বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে রফতানি হয়েছিল ৩৭৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার পণ্য। ওই অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল প্রায় ৬৬ কোটি টাকার পণ্য। এ থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব পায় মাত্র ৫৬ লাখ টাকার মতো।


তবে বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব বাড়লেও নানা সংকটে আমদানি কমেছে। চাহিদামতো সব পণ্য আমদানির অনুমতি না থাকা ও এলসি খুলতে না পারায় আমদানি কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যখন যে পণ্যের চাহিদা তৈরি হবে, তখন সেই পণ্য আমদানির সুবিধার্থে স্থলবন্দর দিয়ে সব পণ্য আমদানি করার অনুমতি চান তারা।


আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হাসিবুল হাসান বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানির জন্য চাহিদামতো এলসি খুলতে পারেননি। এছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আনার অনুমতি রয়েছে, তার অধিকাংশেরই আমাদের অঞ্চলে চাহিদা নেই। ফলে এগুলো আমদানি করে মুনাফা করা যায় না।’


তিনি বলেন, ‘ভারতীয় প্রসাধনী এবং কাপড়ের ভালো বাজার আছে আমাদের এখানে। কিন্তু আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে এ দুটি পণ্য আনার অনুমতি দিচ্ছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এছাড়া আমরা রফতানি বাণিজ্যে বেশি জোর দিচ্ছি। ভারতে নতুন নতুন বাংলাদেশী পণ্যের বাজার তৈরির জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’


আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, ‘আমদানি নীতিমালা অনুযায়ী অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা থাকে, যেগুলো ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে করে আনতে কিছুটা সময় লাগে। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা আখাউড়ায় না থাকলে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই এসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করে সব পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়াটা বাস্তবসম্মত হবে না।’


বিবার্তা/আকঞ্জি/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com