
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নভেম্বরের মধ্যেই আর্থিক খাত নিয়ে শ্বেতপত্র সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। দেশের চলমান অর্থনৈতিক ভঙ্গুর অবস্থা ও সংকটের মূলে রয়েছে স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি ও অনাচারী অর্থনীতি। বিগত সরকারের সময়ে অনাচারী অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাচারী অর্থনীতি সৃষ্টি করা হয়েছিল।
৩১ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা কমিশনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রাজনৈতিক বিবেচনায় পক্ষপাতদুষ্ট মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে মেগা চুরি হয়েছে মন্তব্য করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যতটুকু অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে তার চেয়ে বেশি বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এটার বিপরীতে উন্নয়নের একটি বয়ান সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই অনাচারী অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাচারী রাজনীতির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। এটার ফলে অনাচারের যে চক্রাকার আবহ সৃষ্টি হয়েছিল, তা ভাঙার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, শেষ বিচারের রাজনৈতিক সংস্কার ঠিক না হলে, আমাদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, কর্মদক্ষতা এবং সুশাসনের পথে বাধা সৃষ্টি হবে। আমরা বর্তমান যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছি ভবিষ্যতেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন হবে তা নির্ধারণ করবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তাদের কতটা স্বস্তি দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ সংস্কারগুলোর পরিধি, ধারাবাহিকতা এবং গতি কি হবে তা নির্ধারিত হবে সরকার বর্তমান অর্থনীতির কতখানি আশ্বস্ত থাকে এবং জনগণ কতখানি স্বস্তিতে থাকে। যদিও চরম বিচারে রাজনৈতিক নেয়ামক কিন্তু রাজনীতিকে অর্থনৈতিক ভঙ্কুরোতা সে জায়গায় নাও রাখতে পারে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ মুহূর্তে চলমান বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ইতিবাচক সংস্কার পদ্ধতি ও কার্যক্রম আমরা লক্ষ্য করছি। একই সাথে রাজনৈতিক বলেন প্রাতিষ্ঠানিক বলেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আসছে। মনে রাখতে হবে, ব্যক্তি পলিসি বা দলের উপর আমরা যখন কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করি তখন তার অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সেক্ষেত্রে আমরা তাদের রাজনৈতিক ভূমিকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভূমিকাকেও সংকুচিত কবার পথ সৃষ্টি করি। সেহেতু এ বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনার মধ্যে রাখতে হচ্ছে। এইসব বিষয় শ্বেতপত্র প্রনয়ন কমিটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে কাজ করছে।
বৈঠকে ইএফআরের সাংবাদিক নেতারা অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির কাছে নানা প্রকার সংস্কার সুপারিশ তুলে ধরেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সরঞ্জাম ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে বিশাল অনিয়ম তা রোধে করণীয়। মেগা প্রকল্পের মেগা দুর্নীতির পরিমাণ নির্ধারণে পদ্ধতিগত সংস্কার। রাষ্ট্রের ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য প্রবাহের পদ্ধতিগত পরিবর্তন এবং ডেটার সহজলভ্যতার ক্ষেত্র প্রণয়ণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]