চলতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই চারমাসে পেঁয়াজের বাজারে ভোক্তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩২শ’ কোটি টাকা। শুধু জুলাই মাসেই মূল সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে ৩৯৭ কোটি টাকা। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) এক প্রতিবেদনে। রবিবার (৩ নভেম্বর) প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিসিএস’র নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
তিনি বলেন, সম্প্রতি খুচরা বাচারে পেঁয়াজের মূল্য কেজি প্রতি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে ১৫০ থেকে ৬০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। যা দেশের ইতিহাসে পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম।
পলাশ মাহমুদ বলেন, জুলাই মাসের ২ তারিখ থেকে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়। তখন সরবরাহ ও আমদানী স্বাভাবিক থাকলেও এক দিনেই কেজি প্রতি ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা করা হয়। সেই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে (১২২ দিন) মোট ২৪ বার পেঁয়াজের মূল্য ওঠা-নামা করেছে।
পেঁয়াজের মূল্যের এই ওঠা-নামার পেছনে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন, পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে সিন্ডিকেট কাজ করছে। চট্টগ্রামে সিন্ডিকেটের ১৩ সদস্যকে চিহ্নিত করা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যা ভোক্তাকে হতাশ, ব্যাথিত ও ক্ষুব্ধ করে।
পলাশ মাহমুদ বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারত পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ও পরে রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বাড়ানো হয়। এক দিনেই বর্ধিত দামের পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসা সম্ভব নয়। এর পরপরই ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ এক মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু দেশের বাজারে সর্বত্রই এখনো ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এতেই প্রমাণিত হয় পেঁয়াজের সরবরাহ যথেষ্ট ছিল এবং আছে।
দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই উল্লেখ করে সিসিএস এর পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশে বছরে ২৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর দুই তৃতীয়াংশ বা ১৬ লাখ মেট্রিক টনের চাহিদা দেশি পেঁয়াজে পূরণ হয়। কোনো দেশ রপ্তানি বন্ধ করলে দেশি পেঁয়াজ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার বা কমে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদানি খরচ বৃদ্ধির অজুহাতও প্রযোজ্য নয়। ফলে সরবরাহ কম ও আমদানী খরচ বৃদ্ধির অজুহাতে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করে শত শত কোটি হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পলাশ মাহমুদ।
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]